শেয়ার বিজ ডেস্ক: পাকিস্তান সরকার খরচ মেটাতে এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে ৬৫০ বিলিয়ন বা ৬৫ হাজার কোটি রুপি ঋণ করেছে। খবর: ডন।
স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের বরাতে দেশটির গণমাধ্যম ডন জানায়, ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে চলতি বছরের ৫ এপ্রিল পর্যন্ত পাকিস্তান সরকার রেকর্ড পরিমাণ ঋণ করেছে। এই সময়ে তারা পাঁচ লাখ ৫০ হাজার কোটি রুপি ঋণ করেছে। আগের বছরের একই সময়ে পাকিস্তান সরকার ঋণ করেছিল ২৯৫ কোটি রুপি।
এভাবে বিপুল হারে ঋণ করার কারণে বিপাকে পড়েছে দেশটির সরকার। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে সরকারের পক্ষে অন্যান্য ব্যয় করা কঠিন হয়ে উঠেছে। বাজেটের অর্ধেকের বেশি পরিমাণে অর্থ সরকারকে সুদ পরিশোধে ব্যয় করতে হবে।
২০২৩ অর্থবছরে পাকিস্তান সরকার ব্যাংক থেকে তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি রুপি ঋণ করেছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে সরকারের ঋণ আগের অর্থবছরের চেয়ে এক লাখ ৭৮ হাজার কোটি রুপি বেশি। অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে সরকার সাধারণত বেশি ঋণ নিয়ে অর্থনীতির চেহারা ভালো দেখাতে চায়।
পাকিস্তানের অর্থনীতি অভ্যন্তরীণ ও বহিস্থ উভয় দিক থেকে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। সরকার রাজস্ব আয় যা করছে, তার সিংহভাগ দেশি ও বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হয়ে যাচ্ছে। সেজন্য সরকারের পক্ষে নতুন উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নেয়া কঠিন হয়ে গেছে, বরং উন্নয়ন খাতের বাজেট অন্যান্য খাতে চলে যাচ্ছে।
অর্থনীতির বহিস্থ খাতের অবস্থা শোচনীয়। পাকিস্তানের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা কমে যাওয়ায় দেশটির পক্ষে নতুন করে ঋণ করা কঠিন। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে তাদের আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সহায়তা দরকার। গত দুই বছরে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ঋণ করতে পাকিস্তান এমনিতে অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছে।
আর্থিক খাত বিশ্লেষকরা বলেছেন, পাকিস্তানের নতুন সরকার আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ঋণ করার পথ উš§ুক্ত করতে আইএমএফের সঙ্গে নতুন ঋণচুক্তি করতে পারে। প্রবৃদ্ধির ধারা টিকিয়ে রাখতে এবং অনিশ্চয়তার মূল কারণগুলো দূর করতে সময় দরকার।
বিশ্লেষকদের হিসাব অনুসারে, আগামী জুনের মধ্যে পাকিস্তান সরকারের ব্যাংক ঋণ সাত লাখ কোটি রুপিতে উঠে যেতে পারে। সরকার জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে; কিন্তু ব্যয় মেটানোর মতো যথেষ্ট রাজস্ব আয় করতে পারছে না।