ব্রিটিশ কাউন্সিলের রিডিং চ্যালেঞ্জ

সম্প্রতি রাজধানীর ফুলার রোডের ব্রিটিশ কাউন্সিলের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘রিডিং চ্যালেঞ্জ ২০১৮’ শীর্ষক বই পড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। শিশুদের বই পড়তে উৎসাহিত করে তোলার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্যের রিডিং এজেন্সির তত্ত্বাবধানে এ চ্যালেঞ্জ অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের গ্রন্থাগারগুলোয় গ্রীষ্মের ছুটিতে এ প্রতিযোগিতা চলে। ব্রিটিশ কাউন্সিল অন্য দেশেও এর লাইব্রেরি, টিচিং সেন্টার ও স্থানীয় স্কুলগুলোয় এ চ্যালেঞ্জের আয়োজন করে।
প্রতিবছর রিডিং চ্যালেঞ্জের আলাদা প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘অ্যানিমাল এজেন্টস’। চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণকারী সেন্টারগুলোতে এ বছরের প্রতিপাদ্যের ওপর বই ও অন্যান্য গ্রাফিক ম্যাটেরিয়াল, যেমন পোস্টার, সনদ, স্টিকার, বুকমার্ক প্রভৃতি পৌঁছে দেওয়া হয়। শিশুদের কার্যক্রমের অংশগ্রহণমূলক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জের সম্প্রসারণ ঘটানো হয়। এ কার্যক্রমে শিশুদের নির্মল আনন্দের ওপরই গুরুত্বারোপ করা হয়। শিশু ও তাদের বাবা-মায়ের কাছে এ কার্যক্রম বেশ জনপ্রিয়।
এ বছর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় একশ শিশু এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। চ্যালেঞ্জের সময়সীমার মধ্যে তারা ফুলার রোডের ব্রিটিশ কাউন্সিলের কার্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন অংশগ্রহণমূলক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। এসব কর্মসূচির মধ্যে ছিল হ্যালোইন পার্টি, ক্রিসমাস পার্টি ও আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব।
শিশুরা তাদের মা-বাবাসহ পুরস্কার বিতরণীতে উপস্থিত ছিল। ব্রিটিশ কাউন্সিলের হেড অব কালচারাল সেন্টার সারওয়াত মাসুদা রেজার স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে টিচিং সেন্টারের শিক্ষকের সহায়তায় গল্প বলার অংশগ্রহণমূলক সেশন অনুষ্ঠিত হয়। শিশুরা আগ্রহ নিয়ে এ সেশনে অংশগ্রহণ করে এবং পুরোটা সময় আনন্দ নিয়ে অনুষ্ঠান উপভোগ করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত কাকলী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সমন্বয়ক রুকসানা শিলু বলেন, এখানে শিশুদের অংশগ্রহণ তাদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের জন্য সহায়ক হবে। ব্রিটিশ কাউন্সিল ভবিষ্যতেও এ ধরনের উদ্যোগ নিলে আমি কৃতজ্ঞ থাকব।
চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণকারী তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী লিদিকা রহমান জানায়, চ্যালেঞ্জটি বেশ রোমাঞ্চকর ছিল। আমাকে অল্পসময়ে ছয়টি বই পড়ে শেষ করতে হয়েছে, এর পরও আমি এটা অনেক উপভোগ করেছি আর বইগুলোও বেশ চমৎকার ছিল। আমি আবারও এ কর্মসূচিতে অংশ নিতে চাই।
চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণকারী শিশুদের সনদ ও পদক বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
পাদটীকা
বিশ্বজুড়ে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ও শিক্ষার সুযোগ নিয়ে কাজ করে যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক সংস্থা ব্রিটিশ কাউন্সিল। বিশ্বের একশ’টির বেশি দেশে শিল্প, সংস্কৃতি, ইংরেজি ভাষা, শিক্ষা ও সমাজ গঠনে কাজ করে সংস্থাটি। অনলাইন, ব্রডকাস্ট ও বিভিন্ন প্রকাশনার মাধ্যমে গত বছর তারা সরাসরি ৬৫ মিলিয়ন ও সর্বোপরি ৭৩১ মিলিয়ন মানুষের কাছে পৌঁছেছিল। যেসব দেশে ব্রিটিশ কাউন্সিল কাজ করে সেসব দেশে যুক্তরাজ্যের সাংস্কৃতিক সম্পদের ব্যবহারের মাধ্যমে সুযোগ সৃষ্টি, সম্পর্ক নির্মাণ ও আস্থা অর্জনে ইতিবাচক অবদান রাখে। ১৯৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্রিটিশ কাউন্সিল রয়্যাল চার্টার ও ইউকে পাবলিক বডি দ্বারা পরিচালিত যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্য সংস্থা।