শেয়ার বিজ ডেস্ক : ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে গত ৩১ জানুয়ারি ব্রিটেন আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সময়ও শেষের দিকে। এর মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি না হলে ব্রিটেনের ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে। দেশটির গাড়ি শিল্পে আগামী পাঁচ বছরে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি পাউন্ড লোকসান হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা। খবর: বিবিসি।
দ্য সোসাইটি অব মোটর ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স (এসএমএমটি) বলেছে, ‘ইইউর সঙ্গে চুক্তি না হলে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) শুল্ক নিয়ম অনুসারে ব্রিটেনের গাড়ি খাতে আগামী পাঁচ বছরে ৫৫ বিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতি হবে।’ তাই এ সংগঠনের পক্ষ থেকে এবং অন্য ব্যবসায়ীরা ব্রিটিশ সরকারের কাছে এ লোকসান এড়াতে ইইউর সঙ্গে চুক্তিতে যেতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
গত মাসে প্রকাশিত উপাত্তে দেখা গেছে, কভিডের কারণে ইতোমধ্যে তলানিতে গাড়ির চাহিদা। ১৯৯৫ সালের পর গত সেপ্টেম্বরে সবচেয়ে কম গাড়ি উৎপাদন হয়েছে দেশটিতে। এ মাসে মাত্র এক লাখ ১৪ হাজার ৭৩২টি গাড়ি উৎপাদন করা হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এটি পাঁচ শতাংশ কম।
এসএমএমটি বলছে, করোনার কারণে ইতোমধ্যে ইউরোপব্যাপী গাড়ি শিল্পে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এর মধ্যে আবার শুল্ক বাড়লে এ খাত আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। গত সেপ্টেম্বরে ব্রিটেন ও ইউরোপের গাড়ি নির্মাতারা আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছিল, চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট হলে এ অঞ্চলের গাড়ি শিল্পে ১০০ বিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতি হবে। ইউরোপের ২৩টি বাণিজ্য গ্রুপ গত সেপ্টেম্বরে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট ঠেকাতে সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল।
ব্রেক্সিট-পরবর্তীতে সব ধরনের শুল্ক এড়ানোসহ নির্বিবাদ বাণিজ্য নিশ্চিতের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মেধার সম্মেলনের আহ্বান জানিয়েছে এসএমএমটি। বাণিজ্য সংগঠনটির প্রধান নির্বাহী (সিইও) মাইক হাওইস বলেন, যুক্তরাজ্যের গাড়ি শিল্পের প্রয়োজনগুলো স্পষ্ট; শুল্কমুক্ত নির্বিবাদ বাণিজ্য, নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ সম্পর্ক এবং মেধার অব্যাহত সরবরাহ। বাণিজ্য আলোচনা এখনও শেষ হয়নি। বিনিয়োগ সম্ভাবনার সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য সম্পর্ক জরুরি।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তী ব্রিটিশ সরকারকে জনগণের এ উচ্চাকাক্সক্ষার প্রতিনিধিত্ব করতে হবে, প্রতিদ্বন্দ্বি^তাপূর্ণ ব্যবসায় পরিবেশ এবং ব্রিটেনের গাড়ি শিল্প চাঙ্গায় দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করতে হবে।
গাড়ি শিল্প বরাবরই ব্রেক্সিটের বিপক্ষে মত দিয়ে আসছে। এক্ষেত্রে তাদের যুক্তি হচ্ছে, সীমান্তে শুল্ক বাদেও যে কোনো ধরনের বিলম্ব উৎপাদন খরচ ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেবে। হাওইস বলেন, ডিসেম্বরের নির্বাচনের মাধ্যমে অনিশ্চয়তা প্রলম্বিত হওয়ায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।