Print Date & Time : 20 July 2025 Sunday 1:22 pm

বড়পুকুরিয়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা নিশ্চিত করুন

জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বিশ্বব্যাপী নানা ধরনের শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠা এবং পরিবেশ দূষণকে দায়ী করা হয়। সে কারণে বিশ্বব্যাপী অধিকাংশ দেশ পরিবেশ রক্ষায় নানা নীতি গ্রহণ করছে। শিল্প-কারখানা পরিবেশবান্ধব করার পাশাপাশি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধ, জ্বালানি তেলচালিত গাড়ি নিষিদ্ধ করাসহ নানা ব্যবস্থা নিচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে যেসব দেশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সে ক্ষেত্রে আমাদের বেশি সতর্ক থাকা জরুরি। অথচ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং শিল্প-কারখানা আমাদের পরিবেশের জন্য বড় হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে সুন্দরবনসহ কিছু ইস্যুতে সমগ্র বিশ্ব উদ্বেগও প্রকাশ করেছে।
ফলে পরিবেশ রক্ষায় অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া গেলে
তা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
গতকালের দৈনিক শেয়ার বিজে ‘বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের মানববন্ধন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এতে বলা হয়, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি বাজারে বিনা মূল্যে খাবার পানি সরবরাহের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসী। তাদের অভিযোগ, বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে ১৪টি গভীর নলকূপ বসিয়ে ভূগর্ভ থেকে পানি সেচ দিচ্ছে। ফলে আশেপাশের ২৫টি গ্রামে টিউবওয়েল অকেজো হয়ে পড়ায় খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে সেখানে অসন্তোষ তৈরি হওয়া স্বাভাবিক এবং গ্রামবাসী আন্দোলনও করেছেন।
খবরেই উল্লেখ করা হয়েছে, প্রথম অবস্থায় মাত্র তিন টাকা ইউনিটে খাবার পানি সরবরাহ করলেও বর্তমানে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে সাত টাকা। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা বিনা মূল্যে খাবার পানি সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন। তবে বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেও কোনো সাড়া না পাওয়ায় এখন আন্দোলন করছেন। এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো, গ্রামাঞ্চলের মানুষ পানি কিনে খেতে অভ্যস্ত নন। মূল্য যাই হোক, পানি কিনে পান করতে হলে তাদের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। এতে তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে তারা যেসব দাবির কথা জানিয়েছেন, সেগুলো বিবেচনা করা জরুরি।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এ পৃথিবীকে বাসযোগ্য রেখে যেতে হলে পরিবেশ রক্ষার কোনো বিকল্প নেই। অথচ এদেশে বনভূমির জন্য হুমকি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে, শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশের স্বার্থে ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা বিবেচনা করে এ অবস্থান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত। বিশ্বের অধিকাংশ দেশকে অনুসরণ করে আমাদেরও পরিবেশবান্ধব নীতি গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া বড় পুকুরিয়ার মতো কর্মকাণ্ডে যারা ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে আমরা আশা করি।