Print Date & Time : 12 September 2025 Friday 2:42 am

ভবন নির্মাণ নীতিমালা মেনে চলার তাগিদ এফবিসিসিআইয়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক: অগ্নিকাণ্ডসহ যেকোনো দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসে শহরের পাশাপাশি মফস্বলেও ভবন নির্মাণ নীতিমালা কঠোরভাবে অনুসরণের কোনো বিকল্প নেই। এছাড়া রাজধানীতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ, শিল্পকারখানা নির্মাণ এবং নগরায়ণের ক্ষেত্রে সরকার প্রণীত বিধিবিধান ও আইনের যথাযথ প্রয়োগে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের তৎপরতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।

গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীর মতিঝিলে অবস্থিত এফবিসিসিআই কার্যালয়ে ‘ফায়ার সেফটি চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড মিটিগেশন স্ট্র্যাটেজিস ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, আমরা সবাই একটি বসবাসযোগ্য ও স্মার্ট ঢাকা গড়ে তুলতে চাই। এই পরিকল্পনাকে সামনে রেখে বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে। সবুজ ঢাকা বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতসহ সর্বসাধারণের অংশগ্রহণ চান মন্ত্রী।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সারাদেশে খাল, বিল, নদী, পুকুর দখলমুক্ত করার উদ্যোগ চলমান। প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণে সরকার প্রয়োজনের আরও কঠোর হবে বলে হুঁশিয়ারি জানান তিনি। অগ্নিকাণ্ড ও যেকোনো দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবিলায় দক্ষ ফায়ার ফাইটার এবং স্বেচ্ছাসেবী তৈরির ওপর গুরুত্ব দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, ফায়ার একাডেমি নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে জায়গা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যেখানে অবকাঠামো নির্মাণকাজও চলমান। পাশাপাশি সিভিল ডিফেন্স ও স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।

এর আগে সভাপতির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, প্রতি বছর অগ্নিকাণ্ডের জন্য প্রাণহানির পাশাপাশি রাষ্ট্রের অনেক সম্পদ নষ্ট হয়ে যায়। সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব।

এফবিসিসিআই সভাপতি জানান, তৈরি পোশাকসহ রপ্তানিমুখী শিল্পের বাইরে অন্যান্য শিল্পে কমপ্লায়েন্স বাস্তবায়নে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে কার্যক্রম শুরু করেছে এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিল। যার আওতায় গার্মেন্টস ব্যতীত প্রায় ১ হাজার ২০০টি শিল্প-কারখানা ও ১৭২টি মার্কেট পরিদর্শন এবং কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদান; ৪ হাজার ৬০০ জন শ্রমিককে অগ্নিকাণ্ডজনিত ঘটনায় প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ে প্রশিক্ষণ; ১৪০ জন মাস্টার ট্রেইনার তৈরি এবং ৪টি বিভাগীয় চেম্বার ও ১২টি অ্যাসোসিয়েশন সেফটি সেল স্থাপন করা হয়েছে।

ইলেক্ট্রনিকস সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশনের (ইসাব) তথ্য বলছে, দেশে যেসব অগ্নিনির্বাপক ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার হয় তার শতভাগ আমদানি করতে হয়। আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে দেশেই গুণগত মানের ফায়ার সেফটি ইকুইপমেন্ট তৈরিতে সরকারের সহযোগিতা চান এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক এবং ইসাবের সভাপতি মো. নিয়াজ আলী চিশতি। অগ্নিঝুঁকি কমাতে শিল্প এলাকাগুলোয় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে স্যাটেলাইট ফায়ার স্টেশন স্থাপনের পরামর্শ দেন এফবিসিসিআইয়ের প্যানেল উপদেষ্টা স্থপতি ইকবাল হাবীব।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. জিল্লুর রহমান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑএফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, সহসভাপতি মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, রাশেদুল হোসেন চৌধুরী (রনি), মো. মুনির হোসেন, এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিলের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শহিদুল্লাহ, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালকরা, সাধারণ পরিষদের সদস্য, ব্যবসায়ী নেতারা।