Print Date & Time : 18 August 2025 Monday 12:09 am

‘ভাঙনকবলিত এলাকায় শুরু হচ্ছে ড্রেজিং’

নিজস্ব প্রতিবেদক: নড়িয়ার ভাঙনকবলিত এলাকায় ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করতে একটি ড্রেজার এসে পৌঁছেছে। আজ (সোমবার) থেকে ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হচ্ছে। এছাড়া পানি কমলেই ওই এলাকায় বাঁধের কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) সচিব কবির বিন আনোয়ার।
নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর, মুলফৎগঞ্জ ও বাঁশতলার ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে গতকাল দুপুর পৌনে ১টার দিকে নড়িয়া উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সচিব এসব কথা বলেন।
কবির বিন আনোয়ার বলেন, ‘স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধের জন্য শরীয়তপুরের জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলার ৯ কিলোমিটারজুড়ে ‘পদ্মার ডান তীররক্ষা প্রকল্প’ গত ২ জানুয়ারি একনেক সভায় পাস হয়েছে। পদ্মা সেতু থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৯৭ কোটি টাকা। ২০২১ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বর্তমানে পদ্মার ভাঙনের তীব্রতা রোধে জুলাইয়ে সাড়ে ছয় কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ অর্থ ব্যবহার করে ১১ জুলাই থেকে ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে, যা এখনও অব্যাহত আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মুলফৎগঞ্জ বাজারের পদ্মার পাড়ে জিও ব্যাগ ফেলে কিছুটা হলেও ভাঙন ঠেকানো গেছে। এ খাতে নতুন করে আরও দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পদ্মার স্রোতে নড়িয়া-জাজিরার তীরগুলো ভেঙে যাচ্ছে। তাই মাঝখানের চরগুলোকে কেটে ওইদিক দিয়ে পানি প্রবাহিত করার চেষ্টা চলবে। স্রোতটাকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। প্ল্যান করেই কাজ শুরু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ কাজে নড়িয়া এলাকায় একটি ড্রেজার এসেছে। আরেকটি ড্রেজার দু-এক দিনের মধ্যে ভাঙনকবলিত এলাকায় পৌঁছে যাবে। নড়িয়া-জাজিরার এই অংশে ৯ দশমিক ৭৯ কিলোমিটার ড্রেজিংয়ের কাজ করা হবে। আর ৯ দশমিক ৯০ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া একনেকে পাস হওয়া পদ্মা সেতুর ডানতীর ও বামতীর বাঁধ রক্ষায় এক হাজার ৪৯০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ এই শুকনো মৌসুমে শুরু হবে।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আড়িয়াল খাঁ, মধুমতি ও পদ্মা নিয়ে আরও দুই হাজার ৯১ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে পাস হয়েছে। প্রতি বছর পদ্মায় ভাঙনে যারা সহায়-সম্বলহীন হয়ে যাচ্ছে তাদের কথা চিন্তা করে রিভার সিস্টেম ডেভেলপ করে স্থায়ী বাঁধ গড়ে তোলা হবে। ১০০ বছরের পরিকল্পনা এটি। আর নদ-নদীর জন্য আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে (১২ বছরে) দুই লাখ ২৯ হাজার কোটি টাকা খরচ করে ৮০টি প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। যে প্রকল্পগুলো সরাসরি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের।
প্রেস ব্রিফিংয়ের আগে নড়িয়া উপজেলা চত্বরে ভাঙনকবলিত এলাকার এক হাজার ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারকে পাঁচ কেজি চাল, এক কেজি লবণ, এক কেজি চিনি, এক কেজি চিড়া, এক কেজি বিস্কুট, এক লিটার সয়াবিন তেল, ৫০০ গ্রাম মুড়ি, ১২টি দিয়াশলাইয়ের প্যাকেট ও ১২টি মোম বিতরণ করেন ভারপ্রাপ্ত সচিব। এ সময় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের, নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা ইয়াসমিন, নড়িয়া পৌরসভার মেয়র শহিদুল ইসলাম বাবু রাড়ী ও নড়িয়া উপজেলা পিআইও (ভারপ্রাপ্ত) স্বপন মাতব্বর উপস্থিত ছিলেন।