শেয়ার বিজ ডেস্ক: চলতি সপ্তাহে লাদাখ সীমান্তে চীনের সঙ্গে সংঘর্ষে ভারতের বিশেষ বাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার তিব্বতের এক সংসদ সদস্যের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। এদিকে ভারত-চীন সীমান্তবর্তী প্রতিটি অঞ্চলে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। পাঠানো হয়েছে অতিরিক্ত সেনা। গোয়েন্দা সূত্র জানাচ্ছে, পূর্ব লাদাখে প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তে ভারতীয় সেনাকে ব্যস্ত রেখে উত্তর পূর্ব ভারতের চীন সীমান্তে বড়সড় আক্রমণ চালাতে পারে চীন। খবর: রয়টার্স।
১৯৬২ সালে চীন-ভারতের মধ্যে তুমুল সীমান্ত সংঘর্ষের পর দীর্ঘদিন থেকেই শান্ত ছিল এ অঞ্চল। মাস দুয়েক আগে হঠাৎ করেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গত ১৫ জুন লাদাখ সীমান্তে দুই বাহিনীর সংঘর্ষে ভারতের অন্তত ২০ সেনা প্রাণ হারান। তবে এ ঘটনায় চীনের কতজন হতাহত হয়েছে তা জানায়নি দেশটি।
ওই ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে আবারও বিরোধ বেধেছে চীন-ভারত সীমান্তে। প্রথমে গত শনিবার, এরপর সোমবার একে অপরের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগ তুলেছে দুই পক্ষই। তিব্বতের নির্বাসিত সংসদ সদস্য নামগিয়াল দোলকার লাগিয়ারি এএফপি’কে বলেন, শনিবার রাতের সংঘর্ষে তিব্বতিয়ান বংশোদ্ভূত এক ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছেন। এসময় স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্সের (এসএফএফ) আরও এক সদস্য আহত হন।
তবে ভারতীয় গণমাধ্যমে দেশটির কোনো সৈন্য নিহত হওয়ার খবর দেখা যায়নি। ভারত সরকারও এসএফএফের কার্যক্রম সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, গত শনিবার সীমান্তে স্থিতিশীল অবস্থা পরিবর্তনে চীনা সেনারা উসকানিমূলক সামরিক কর্মকাণ্ড করছিল।
তবে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) বলছে, গত সোমবারের অভিযানে চীনের আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করেছে ভারত। অঞ্চলটি থেকে দ্রুত ভারতীয় বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে তারা।
আবার ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত মঙ্গলবার দাবি করেছে, দুই পক্ষের কমান্ডাররা আলোচনায় থাকা অবস্থাতেই সীমান্তে উত্তেজনামূলক ঘটনা ঘটিয়েছে চীন।
নতুন সংঘাতের উৎস একটি পাহাড়কে কেন্দ্র করে। প্যাংগংয়ের দক্ষিণ প্রান্তে একটি পাহাড়ের দখল নিয়েছে ভারতীয় সেনা। স্ট্র্যাটেজিক দিক থেকে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় সেনা ওই পাহাড়ের দখল নেওয়ার পর থেকেই চীনের সেনা বারবার সেখান থেকে ভারতীয় সেনাকে সরানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু উচ্চতার সুযোগ নিচ্ছে ভারতীয় সেনা। এ নিয়েই আপাতত বিতর্ক চলছে। বস্তুত, ৩১ আগস্ট চীনের সেনা যখন ভারতীয় সেনাকে ঘিরে ফেলে, অদূরেই চুসুল সেক্টরে কমান্ডার স্তরের বৈঠক চলছিল দু’দেশের সেনার। তারই মধ্যে নতুন সংঘাতের খবর পৌঁছায়। কমান্ডাররা সেনাদের সরে যাওয়ার কথা বলেন। ফলে বড়সড় সংঘর্ষ হয়নি।