ভারতের ধর্মগুরু রাম রহিমের ১০ বছর কারাদণ্ড

শেয়ার বিজ ডেস্ক: দুই নারীভক্তকে ধর্ষণের দায়ে ভারতের স্বঘোষিত আধ্যাত্মিক গুরু গুরমিত রাম রহিম সিংকে দশ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬/৫০৬ ধারায় এ দণ্ডাদেশ দেন কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (সিবিআই) বিশেষ আদালতের বিচারপতি জগদীপ সিং।

গতকাল সোমবার রোহাতক শহরে ১০ কিলোমিটার দূরের সানোরিয়া কারাগারে শুরু হয় আদালতের কার্যক্রম। বিচারক উভয় পক্ষকে তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ১০ মিনিট করে সময় দেন।

শুরুতেই বিবাদী আইনজীবী গুরুমিতকে একজন সমাজকর্মী হিসেবে অভিহিত করে বলেন, যেহেতু তিনি মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করেন, তাই গুরুমিত বিচারকের সহানুভূতি পেতে পারেন।

একপর্যায়ে রাম রহিম কেঁদে ফেলেন এবং বিচারকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ডেরা চেয়ারপারসন বিপাসনা ইনসানের জানান, তিনি ডেরার অনুসারীদের আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।

রায়ের পর রাম রহিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। এরপর তাকে কারা পোশাক পরিয়ে সেলে পাঠানো হয়।

রাম রহিমের আইনজীবীরা আদালতকে অনুরোধ করেন তার সঙ্গে কিছু ওষুধ রাখার অনুমতি দিতে। এরপর রায়ের কপি ডেরার প্রধান ও সিবিআইএর আইনজীবীকে দেওয়া হয়।

রায়ের পর পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিং জরুরি বৈঠক করেন। তিনি বলেন, ‘জনসাধারণকে অবশ্যই এ রায় মেনে নিতে হবে। অবশ্যই শান্তি বজায় রাখতে হবে। এখন পরিস্থিতি খুব স্বাভাবিক। আমাদের বাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর কিছু ঘটতে দেওয়া যাবে না।’

গত শুক্রবার গুরুমিতকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেওয়া হয় হরিয়ানা রাজ্যের পাঁচকুলায়। রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ১০ হাজারের বেশি গুরুমিত ভক্ত ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। তারা গাড়ি ও বাস পুড়িয়ে দেয়, সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করে। এমনকি মিডিয়ার গাড়িও তাদের হামলা থেকে বাদ যায়নি। সহিংসতায় ৩৮ জনের প্রাণহানি ঘটে। পাঁচকুলাতে বিনষ্ট হয় কোটি টাকার সম্পত্তি। পরে ?সহিংসতায় জড়িত থাকার দায়ে হরিয়ানাতে নয়শ’র বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়। গুরুমিতকে সাজার রায় দেওয়ার পর আবার যাতে সহিংসতা না ঘটে তাই পাঞ্জাব ও হরিয়ানা আদালত পুলিশকে রোহাতক জেলে আদালত বসিয়ে বিতর্কিত গুরুমিতের সাজার রায় দেওয়ার আদেশ দেন।

এর আগে রোহাতকের ডেপুটি কমিশনার অতুল কুমার জানান, রায় ঘোষণাকে সামনে রেখে হরিয়ানার সব এবং পার্শ্ববর্তী পাঞ্জাবের কিছু এলাকার স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছিল, মোবাইল ফোন পরিষেবাও স্থগিত করা হয়েছিল। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রোহাতকের স্থানীয় নাগরিকদের ঘর থেকে বের না হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ।