Print Date & Time : 28 August 2025 Thursday 4:01 pm

ভারতে ৪০ ট্রিলিয়ন রুপির বাজেট ঘোষণা

শেয়ার বিজ ডেস্ক:আসন্ন অর্থবছরের জন্য ৩৯ দশমিক ৪৫ ট্রিলিয়ন রুপির বাজেট প্রস্তাব করেছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। মহাসড়ক নির্মাণ থেকে শুরু করে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনে বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে মহামারির ক্ষতি কাটিয়ে উঠে প্রবৃদ্ধির চাকা সচল রাখার লক্ষ্য নিয়ে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। গতকাল ভারতে বানানো ট্যাবের মাধ্যমে পার্লামেন্টে অর্থমন্ত্রী নিজের চতুর্থ বাজেটটি উপস্থাপন করেন। খবর: রয়টার্স।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বড় ব্যয়ের বাজেট দিলেও আসন্ন অর্থবছরে চলতি অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কম হবে বলেই ধারণা করছে ভারত সরকার। চলতি অর্থবছরে দেশটির প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক দুই শতাংশ হতে পারে বলে ধারণা দেন সীতারামন। আগামী অর্থবছরে এ হার থাকতে পারে আট থেকে সাড়ে আট শতাংশের মধ্যে।

মহামারির ধাক্কায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতের মোট দেশজ উৎপাদন ছয় দশমিক ছয় শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল। সে অবস্থা থেকে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারত।

বাজেট বক্তব্যে সীতারামন বলেন, ‘এ চিত্র অর্থনীতির পুনরুদ্ধার এবং আমাদের দেশের ঘুরে দাঁড়ানোর দৃঢ় সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ।’

তার এবারের বাজেটে মহাসড়ক নির্মাণ ও সম্প্রসারণে ২০০ বিলিয়ন রুপি ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। তিন বছরের মধ্যে ‘বন্দে ভারত’ কর্মসূচির অধীনে নতুন ৪০০ ট্রেন চালু, প্রতি মাসে ১০০ গতিশক্তির টার্মিনাল নির্মাণেরও প্রতিশ্রুতি এসেছে।

বড় ব্যয়ের বাজেট হলেও করপোরেট কর ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী। জাতীয় পেনশন প্রকল্পে করছাড় এবং ডিজিটাল সম্পত্তির লেনদেনে ৩০ শতাংশ কর বসানোর ঘোষণাও এসেছে।

সীতারামনের বাজেট বক্তব্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের ঋণ সুবিধা এবং কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে মনোযোগ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে ডিজিটাল মুদ্রা চালুর ঘোষণা দিয়েছেন।

গতকাল উত্থাপিত এ বাজেটে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ফাইভ-জি মোবাইল পরিষেবা চালু ও ই-পাসপোর্ট ইস্যুর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ নজরের পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়নে দেড় হাজার কোটি রুপি বরাদ্দ দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী। এ বিজেপি নেতা বলেন, ২০১৪ সাল থেকে সরকার গরিব ও প্রান্তিক মানুষদের দিকে নজর দিয়ে আসছে, মধ্যবিত্তের প্রয়োজন মেটাতেও চেষ্টা করছে। দ্রুতগতিতে টিকাদান ভারতের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়ক হয়েছে।

২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবার বাজেট পেশ করেছিলেন নির্মলা সীতারামন। সেবার প্রথা অনুযায়ী তার সঙ্গী ছিল লাল কাপড়ে মোড়ানো ‘বহী খাতা’। ২০২০ সালেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু বিশ্বজুড়ে কভিড মহামারি শুরুর পর ২০২১ সালের বাজেট ছিল অন্য রকম। সেবারই প্রথম লাল মখমলে মোড়া ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ট্যাব নিয়ে সংসদে বাজেট পড়তে ঢুকেছিলেন নির্মলা। একই সঙ্গে ‘ইউনিয়ন বাজেট মোবাইল অ্যাপ’ চালু হয়েছিল। ওই অ্যাপের মাধ্যমে মন্ত্রী ও এমপিদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও বাজেটের যাবতীয় নথি এক ক্লিকেই পেয়ে যেতেন।

এবারও সেই ব্যবস্থা করা হয়। অবশ্য গতবারই একাধিক এমপি-মন্ত্রী কাগজে বাজেট পাওয়ার দাবি তুলেছিলেন। তাদের যুক্তি ছিল, ডিজিটাল নথিতে তারা স্বচ্ছন্দ নন।

বাজেটের আগের দিনও ‘বিজনেস অ্যাডভাইসরি কমিটি’র বৈঠকে বাজেট বক্তৃতার প্রতিলিপির ‘হার্ড কপি’ এমপিদের সরবরাহ করার দাবি উঠেছিল, কিন্তু সরকার তা মানেনি। এমনকি এবার অর্থনৈতিক সমীক্ষার (ইকোনমিক সার্ভে) প্রতিবেদনও ডিজিটাল মাধ্যমেই দেয়া হয়েছে।