শেয়ার বিজ ডেস্ক: ভারত ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের টিকা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভারতীয় সংস্করণ কোভিশিল্ডের নকল টিকা উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গতকাল বুধবার এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে ডব্লিউএইচও বলছে, ‘ভারত ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে কোভিশিল্ড টিকার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ নকল ডোজ উদ্ধার করা হয়েছে এবং এ টিকার প্রস্তুতকারী কোম্পানি সেরাম ইনস্টিটিউট এরই মধ্যে স্বীকার করেছে, উদ্ধারকৃত ডোজগুলো নকল বা ভুয়া।’
‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নকল ডোজ উদ্ধারের ঘটানায় উদ্বিগ্ন। কারণ এসব কর্মকাণ্ডের ফলে জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে এবং মহামারি দীর্ঘায়িত হচ্ছে।’
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার থেকে এখন পর্যন্ত এ সম্পর্কে দাপ্তরিক কোনো বিবৃতি দেয়া হয়নি, তবে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ বিষয়ে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের ঘটনা এড়াতে আগেই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি, কিন্তু তার পরও এটি এড়ানো গেল না। নকল ডোজ কারা উৎপাদন করছে, তা খুঁজে বের করতে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং মোট কতসংখ্যক ভারতীয় নাগরিককে নকল ডোজ দেয়া হয়েছে, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের পুনেতে বিশ্বের বৃহত্তম টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার (এসআইআই) প্রস্তুতকৃত টিকা কোভিশিল্ড প্রস্তুত করা হয়েছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ফর্মুলায়। এর ভারতীয় সংস্করণের নামই কোভিশিল্ড। মহামারি মোকাবিলায় চলতি বছর ১৬ জানুয়ারি থেকে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করে ভারত। কর্মসূচিতে ব্যবহার হচ্ছে মূলত দুটি টিকা কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন। তবে ভারতীয়দের মধ্যে কোভ্যাক্সিনের চেয়ে কোভিশিল্ডের চাহিদা বেশি।
এখন পর্যন্ত দেশটির ৪৮ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি মানুষকে কোভিশিল্ড টিকা দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকার ও দরিদ্র দেশগুলোর জন্য বৈশ্বিক কোভ্যাক্স প্রকল্পের আওতায় এশিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে লাখ লাখ ডোজ কোভিশিল্ড সরবরাহ করেছে সেরাম ইনস্টিটিউট।
দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ভারতের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ১৩ শতাংশ করোনা টিকার দুই ডোজ সম্পন্ন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘ভ্যাকসিন কূটনীতি’র অংশ হিসেবে ভারত তার প্রতিবেশী দেশগুলোকেও এ টিকার লাখ লাখ ডোজ পাঠিয়েছিল। কিন্তু চলতি বছরের এপ্রিল-মে’তে কভিডের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় হিমশিম খাওয়ার পর নয়াদিল্লি দেশজুড়ে টিকাদান বাড়ানো এবং বিদেশে টিকা রপ্তানি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।