Print Date & Time : 28 August 2025 Thursday 1:40 pm

ভারত থেকে আমদানিনির্ভর জিঙ্ক অক্সাইড নিয়ে দুশ্চিন্তা

নূরউদ্দিন রানা : ভারত থেকে আমদানিনির্ভর কাঁচামাল জিঙ্ক অক্সাইড নিয়ে দুশ্চিন্তায় দেশের প্রায় অর্ধশত শিল্প খাতের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা। ভারত ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক টানাপোড়েনে কোনো কারণে এ পণ্যটির আমদানি বাধাগ্রস্ত হলে বা দাম বেড়ে গেলে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বহু খাতের অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, জিঙ্ক অক্সাইড একটি দুর্লভ ও বিচিত্র বৈশিষ্ট্যের অজৈব যৌগ। জিঙ্ক অক্সাইড (তহঙ) বহুমুখী বৈশিষ্ট্য ও বিচিত্র প্রয়োগের জন্য ব্যাপক ব্যবহৃত হয়। রাবার শিল্পে জিঙ্ক অক্সাইডের প্রয়োগ ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ। সিমেন্ট, সিরামিক, ফার্মাসিউটিক্যালস, রাবার, পেইন্টস, প্রসাধনী, খাদ্য ও খাদ্য সংশ্লিষ্ট শিল্প, প্লাস্টিক লুব্রিকেন্ট, ফুড, কালার, সানস্ক্রিন, ব্যাটারি, অগ্নি প্রতিরোধক, পশুখাদ্য, কৃষি পরিবেশ সুরক্ষায় এটির বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে।

জানা গেছে, ভারতের রাজস্থানে রয়েছে জিঙ্ক অক্সাইডের আকরিক জিঙ্কসাইটের প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ খনি। বিরল জিঙ্কসাইট খনি আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সির ফ্র্যাঙ্কলিন ও স্টার্লিং হিল এলাকায়। প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় ভারত থেকে জিঙ্ক অক্সসাইড আমদানি করাই দেশের জন্য সাশ্রয়ী হয় বলে প্রতিবছর প্রায় ১ হাজার ২০০ টনের মতো জিঙ্ক অক্সাইড ভারত থেকে আমদানি করা হয়। আর এ দিয়ে দেশে বিপুল পরিমাণ শিল্পপণ্য উৎপাদন করা হয়, যা আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে তুলতে সহায়তা করছে।

শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, দেশের উৎপাদন খাতে মন্দার পূর্বাভাস আসছে। এবার জ্বালানি নয়, মূলধনী যন্ত্রপাতিও নয়; কাঁচামালের সংকটে পড়তে যাচ্ছে স্থানীয় বহুবিধ শিল্পের ছোট বড় কারখানা। শিল্পের চাকা বন্ধ হলে শ্রমিক ছাঁটাই হবে এবং রপ্তানিতে পড়বে নেতিবাচক প্রভাব। উপরন্তু স্থানীয় বাজার চাহিদা মেটাতেও পণ্য আমদানির প্রয়োজন হতে পারে। অর্থাৎ অর্থনীতির বিদ্যমান সংকট গভীর হতে পারে। ইতোমধ্যে, গ্যাস সংকটে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ। সিরামিক শিল্প উৎপাদন সক্ষমতার মাত্র ৩৫ শতাংশ ব্যবহার করতে পারছে। কার্যাদেশও বাতিল হচ্ছে এ খাতে। এমনটি চলতে থাকলে, অচিরেই শিল্প খাতে ব্যাপকভাবে শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শিল্প মালিকরা।

শিল্প মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জ্বালানির পর এবার কাঁচামাল সংকটে পড়ার পূর্বাভাস পেয়েছে শেয়ার বিজ। এর পেছনের কারণ বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েন। তারা বলছেন, প্রতিবেশী ভারত এখানে বহুবিধ শিল্প যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালের অন্যতম জোগানদাতা। পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে ভারত যদি এ দেশের স্থানীয় শিল্প খাতে আঘাত করার মতো কঠিন পদক্ষেপ নিতে চায়, তাহলে গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামালগুলো সরবরাহ বন্ধ করাই যথেষ্ট হবে মোদি সরকারের জন্য। এর মধ্যে জিঙ্ক অক্সাইড অন্যতম।

সাম্প্রতিক জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির পর এই নতুন আশঙ্কা জেগেছে শিল্পপতিদের মাঝে। কাঁচামাল সংকটে কঠিন সময়ের মুখোমুখি হবার আশঙ্কা তারা দেখছেন। কারণ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক চরম বৈরিতার পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। এমন বাস্তবতায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে মূলধনী যন্ত্রপাতিসহ কাঁচামালের বিকল্প উৎস অনুসন্ধানের কথা ভাবতে হবে। শিল্প মালিকরা বলছেন, আমরা নিজেরাও গুরুত্বপূর্ণ শিল্প-কাঁচামালের ক্ষেত্রে ভারত ব্যতীত অন্য কোথাও ভিন্ন উৎস সন্ধানে তৎপর আছি। ঝুঁকিপূর্ণ একটি পরিস্থিতি এড়াতেই আমাদের এই প্রচেষ্টা।

সম্প্রতি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের টানাপোড়েনে গত ৮ এপ্রিল ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে। এই সুবিধা বাতিলের আগে ভারত থেকে সুতা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছিল বাংলাদেশ।

শেয়ার বিজের অনুসন্ধানে মিলেছে, দেশের শিল্প খাত কাঁচামাল সংকটে পড়ার তথ্যউপাত্ত। একটি মাত্র কাঁচামাল জিঙ্ক অক্সাইডের সরবরাহে সংকট হলেই বহুবিধ পণ্য উৎপাদনের চাকা বন্ধ হবে বলে জানান বেশ কয়েকজন শিল্পোদ্যোক্তা। সিরামিক শিল্প-মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমইএ) সভাপতি মাইনুল ইসলাম এই প্রতিবদককে দেন এমন অবাক করা তথ্য।

মাইনুল ইসলাম জানান, শিল্প খাতে বহুবিধ ও বৈচিত্র্যময় প্রয়োগের অতীব গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল হলো ‘জিঙ্ক অক্সাইড’। এটি একটি দুর্লভ ও বিচিত্র বৈশিষ্ট্যের অজৈব যৌগ, যার সূত্র জিঙ্ক অক্সাইড (তহঙ); দস্তা ও অক্সিজেন পরমাণু দ্বারা এটি গঠিত। সিরামিক পণ্য তৈরিতে এটি ব্যাপক ব্যবহার হয়। টাইলস, টেবিলওয়্যার ও স্যানিটারিÑ এই তিন পণ্যের প্রক্রিয়াতেই জিঙ্ক অক্সাইডের ব্যবহার অপরিহার্য। বাংলাদেশে এই কাঁচামালের প্রধান জোগানদাতা ভারত। ফলে দুই দেশের সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিতে, বয়কটের পাল্টা জবাবে বহুল ব্যবহারের জিঙ্ক অক্সাইড সরবরাহ বন্ধ করে বিপদে ফেলার কৌশল অবলম্বন করতে পারে। তাহলে আমাদের সত্যি বিপদে পড়তে হবে’।

শিল্প কাঁচামাল ও কেমিক্যালস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ব্রিজ কেমি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল করিমও শিল্প খাতের কাঁচামাল সংকটে পড়ার ইঙ্গিত দিলেন। বিসিএমইএ সভাপতির বক্তব্যের সমর্থনে ‘ওয়ার্ল্ড ইন্টিগ্রেটেড ট্রেড সলুশন’ (ডব্লিউইটিএস) উদ্ধৃত করে নাজমুল করিম জানান, ‘২০২৩ সালে বাংলাদেশে জিঙ্ক অক্সাইড ও জিঙ্ক পারঅক্সাইডের শীর্ষ রপ্তানিকারক ছিল ভারত। এ সময় প্রতিবেশী এই দেশটি বাংলাদেশে ২,৮২০.৮৮ হাজার ডলার মূল্যের ১১ লাখ কেজির অধিক জিঙ্ক অক্সাইড সরবরাহ করেছে। শেখ হাসিনার পতনের পর দুই দেশের বৈরিতা ও বিরোধিতায় ভারত তাদের যদি জিঙ্ক অক্সাইড রপ্তানির স্বার্থ বিসর্জন দেয় কিংবা বেশি মুনাফার জন্য মূল্য বাড়িয়ে দেয়, তাহলে কঠিন বিপদে পড়তে হবে বাংলাদেশকে।’

বিসিএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং এক্সিলেন্স টাইলস ইন্ডাস্ট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল হাকিম সুমন জানান, ‘শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার বৈরিতাপূর্ণ সম্পর্ক প্রকট হচ্ছে। এ সময়ে বাণিজ্যিক অবরোধের বিবেচনায় মোদি সরকার যদি আমাদের শিল্প খাতে আঘাত করতে চায়; তাহলে জিঙ্ক অক্সাইডের মতো বহুমুখী ও বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রয়োগের একটি মাত্র কাঁচামাল সরবরাহ বন্ধ করে কিংবা মূল্য বাড়িয়ে দিলেই প্রায় অর্ধশত শিল্পের উৎপাদন ব্যাহত হবে।’

আরএফএলের এক ঊর্ধ্বতন নির্বাহী জনাব রুবেল জানান, ‘ফুটওয়্যার ও সিরামিক পণ্য উৎপাদনে প্রচুর জিঙ্ক অক্সাইড ব্যবহার করতে হয়। মাসে আমাদের প্রায় ১০ টন জিঙ্ক অক্সাইডের চাহিদা আছে, যার মূল্য প্রায় ২৫ হাজার ডলার। উৎপাদন প্রক্রিয়া যাতে বিঘ্ন না ঘটে সে কারণে ভারত ছাড়া আমরা সৌদি আরব থেকে আমদানি করে থাকি।’

অনুসন্ধানে জানা যায়, জিঙ্ক অক্সাইডের বহুল ব্যবহার রয়েছে সিমেন্ট, সিরামিক, ফার্মাসিউটিক্যালস, রাবার, পেইন্টস, প্রসাধনী, খাদ্য পরিপূরক, প্লাস্টিক, লুব্রিকেন্ট, রঙ, সানস্ক্রিন, মলম, আঠালো, সিল্যান্ট, রঙ্গক, খাবার, ব্যাটারি, ফেরাইট’সহ অগ্নি প্রতিরোধক পণ্য তৈরিতে। ফলে জিঙ্ক অক্সাইডের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামালের বিকল্প উৎস সন্ধানে মনোযোগী হওয়ার বার্তা দিলেন মামুনুর রশীদ এফসিএমএ।

তৈরি পোশাকের শীর্ষ রপ্তানিকারক ডিবিএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ জব্বার। তিনি জানান, ‘টেক্সটাইল পণ্য তৈরিতে জিঙ্ক অক্সাইড গুরুত্বপূর্ণ একটি কাঁচামাল। এটি কাপড়ের বৈশিষ্ট্য বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত হয়; বিশেষ করে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, ইউভি সুরক্ষা এবং ফটোক্যাটালিটিক কার্যকারিতা প্রদানের কার্যকারিতায়। এম এ জব্বার জানান, এটি বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে কাপড়ে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে আবরণ ও অ্যাম্বেডিং। এটি তুলা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক ফাইবার টেক্সটাইলের ক্ষেত্রেও বিশেষভাবে কার্যকর।’

এ বিষয়ে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক ও ব্যবসায়ী নেতা আবদুল হকের অভিমত জানলে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতি ভারতের কূটনীতি যেহেতু কোনো সুস্থ স্বাভাবিক ধারা মেনে চলছে না, সে কারণে ভারতের দিক থেকে বাণিজ্য প্রতিরোধের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। সে জন্যে, আমাদের আগাম সতর্কতামূলক প্রস্তুতি থাকা আবশ্যক। তবে আমি মনে করি, নিজেদের স্বার্থেই ভারত এমন পদক্ষেপ নেবে না।’

বাংলাদেশে রাবারজাত পণ্যের শীর্ষ উৎপাদক অ্যাপেক্স হুসেইন গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম শিহাব জানান, ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের বৈরিতার প্রেক্ষাপটে তিনি নতুন আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দেন না। তিনি জানান, ‘রাবার শিল্পে জিঙ্ক অক্সাইড ব্যবহার অপরিহার্য। জিঙ্ক অক্সাইড (তহঙ) রাবার শিল্পের একটি মূল উপাদান, যা মূলত ভালকানাইজেশন প্রক্রিয়ায় একটি অ্যাক্টিভেটর হিসেবে ব্যবহƒত হয়। তিনি আরও যুক্ত করেন, জিঙ্ক অক্সাইড প্রাকৃতিক রাবারকে একটি টেকসই, আরও স্থিতিস্থাপক উপাদানে রূপান্তরিত করে। অতিরিক্তভাবে, এটি রাবার পণ্য তৈরিতে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে ফিলার ও রঙ্গক হিসেবে কাজ করে। আমাদের আমদানি-নির্ভরতার সুযোগ নিয়ে ভারত চাইলে বিপদে ফেলতে পারে বাংলাদেশকে।’

সজিব গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. শহীদ হাসান জানান, ‘২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক চরম বৈরিতাপূর্ণ ও সংঘাতময় হয়ে উঠেছে; সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজমান। দুই দেশের কূটনৈতিক অবস্থানের ওপর নির্ভর করবে কেউ কারও বাণিজ্যে আঘাত করবে কিনা? এখানে বাংলাদেশের শঙ্কার বিষয়টি হলো, শিল্পের মূলধনী যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ এবং প্রচুর কাঁচামাল আমদানি করতে হয় আমাদের। এই সরবরাহ চ্যানেলে বিঘ্ন ঘটলে তার প্রভাব ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বেশি পড়বে’।

শিল্প মালিকদের মতামত হলো, বাংলাদেশকে অবশ্যই শিল্প যন্ত্রাংশ ও কাঁচামালের বিকল্প উৎস সন্ধান করতে হবে। এ বিষয়ে এখনই কার্যকর ও দূরদর্শী পদক্ষেপ না নিলে যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা বাস্তবে রূপ পেতে পারে। শিল্প মালিকরা জানান, একমাত্র শ্রমিক ছাড়া বাংলাদেশকে শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল ও প্রযুক্তি; এসবই আমদানি করতে হয়। জ্বালানির সরবরাহ সংকট ও মূল্য বৃদ্ধিতে যখন শিল্প খাতের বিপর্যস্ত দশা তখন নতুন করে কাঁচামালের সংকটে পড়ার শঙ্কা থেকে মুক্ত হতে মূলধনী যন্ত্রপাতি এবং কাঁচামালের বিকল্প সহজলভ্য ও সুলভ উৎস অনুসন্ধান করতে হবে।

ভারত থেকে আমদানি-নির্ভরতা: তথ্যমতে, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানি ১৭ দশমিক ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বহুবিধ পণ্য; যেমন, যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ উল্লেখযোগ্য। ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানি করা যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, মেশিন টুলস, টেক্সটাইল ও নির্মাণ যন্ত্রপাতি। ভারত থেকে প্রচুর শিল্প কাঁচামাল আমদানি করা হয়। এর মধ্যে আছে জিঙ্ক অক্সাইড নামের বৈচিত্র্যময় বৈশিষ্ট্যের এই অজৈব যৌগটি। এই একটি কাঁচামালের সংকটেই বন্ধ হতে পারে বৃহৎ, ক্ষুদ্র মাঝারি বহু খাতের শিল্পের চাকা।

২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ভারত থেকে ১ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। এটি আগের বছরের ১ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ৭৪ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার (৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ) কম। দ্য অবজারভেটরি অব ইকোনমিক কমপ্লেক্সিটির মতে, ওই মাসে ভারত থেকে বাংলাদেশে সর্বাধিক রপ্তানি ছিল সুতা, পেট্রোলিয়াম পণ্য এবং অন্যান্য পণ্য।

ডব্লিউইটিএসের তথ্যে জানা যায়, ২০২৩ সালে ভারত ছিল এ দেশে জিঙ্ক অক্সাইডের প্রধান রপ্তানিকারক। এরপরই আছে সৌদি আরব ২,৪৪৯ দশমিক ৮২ হাজার ডলার (৮৪৪,১৪৬ কেজি), চীন ২০২ দশমিক ৩১ হাজার ডলার (৫৮,৬০০ কেজি) ও কানাডা ১৯৩ দশমিক ৯৬ হাজার ডলার (৭৪,৭৬১ কেজি) জিঙ্ক অক্সাইড রপ্তানি করেছে বাংলাদেশে। আমদানি পর্যায়ে এখানে প্রতি কেজি জিঙ্ক অক্সাইডের মূল্য ২ দশমিক ৬ ডলার।