প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অতিরিক্ত ফি আদায়, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, অ্যাডমিট কার্ড, এমনকি প্রশংসাপত্র নেওয়ার ক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। বিষয়টি নিয়ে স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তবে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক বলছেন, সরকার প্রতিষ্ঠান চালানোর জন্য টাকা দেয় না। তাই ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এসব নেওয়া হচ্ছে।
অভিযোগে জানা যায়, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে যে কোনো অজুহাতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। এমনকি সরকারি নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে অতিরিক্ত ফি আদায়, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, অ্যাডমিট কার্ড, এমনকি প্রশংসাপত্র নেওয়ার ক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে সম্প্রতি ওই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য শিক্ষার্থীরা কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রশংসাপত্র সংগ্রহ করছে। কিন্তু এই প্রশংসাপত্রের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। আবার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার ফি বাবদ ২৫০ টাকা নিচ্ছে, যা অন্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ে দ্বিগুণ। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বছরের পর বছর ধরে চলে আসা এই অনিয়নের অবসান চান তারা।
এ ব্যাপারে ওই প্রতিষ্ঠানের এসএসসি কৃতকার্য শিক্ষার্থীর অভিভাবক নূরুল আমীন জানান, সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই প্রতিষ্ঠানটি নিজের ইচ্ছামতো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করছে। অতিরিক্ত ফি আদায়সহ বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
অন্য এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আবুল কালাম জানান, প্রসংশাপত্র নেওয়ার জন্য অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো টাকা নেয় না। কিন্তু পইল উচ্চ বিদ্যালয় গরিব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা এবং সচ্ছল শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে নিচ্ছে, যা সরকারি নিয়মবহির্ভূত। এর প্রতিবাদ করলে উল্টো অভিভাবকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষসহ শিক্ষকরা।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষাক কামাল উদ্দিন আসার পর থেকেই পইল উচ্চ বিদ্যালয়ে অনিয়মের মাত্রা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়সহ বিভিন্ন অজুহাতে টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পইল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কামাল উদ্দিন জানান, প্রশংসাপত্রের জন্য কোনো টাকা নেওয়ার নিয়ম নেই, কিন্তু সব প্রতিষ্ঠানই নিচ্ছে। সরকার প্রতিষ্ঠান চালানোর জন্য কোনো টাকা দেয় না। তাই সরকারি সব নিয়ম অনুসরণ করা সম্ভব নয়।
