Print Date & Time : 26 August 2025 Tuesday 4:09 pm

ভালো কোম্পানি আনতে মার্চেন্ট ব্যাংক ভুমিকা রাখতে পারে

পুঁজিবাজারে গত দু-তিন দিনের মধ্যে লেনদেন দেড় হাজার কোটি থেকে ৬০০ কোটির ঘরে নেমে এসেছে। এর প্রধান কারণ ব্যাংক খাতের সংশোধন। পুঁজিবাজারে বাজার মূলধনের ৩০-৪০ শতাংশই ধারণ করে ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলো। তাই এ খাতের সংশোধন হলে বাজারে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বাজারকে শক্তিশালী অবস্থানে নিতে হলে এ ধরনের বড় আরও মূলধনি কোম্পানিকে আনতে হবে। দেশে সরকারি-বেসরকারি অনেক ভালো কোম্পানি আছে যারা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয়, তাদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে আনতে হবে। আর এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখতে পারে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে এ বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে আসে। খুজিস্তা নূর-ই-নাহারীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শেলটেক ব্রোকারেজ লিমিটেডের সিইও মঈন উদ্দিন এবং আইসিএবির ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মাহমুদ হোসেন, এফসিএ।

মঈন উদ্দিন বলেন, দু-তিন দিনের মধ্যে পুঁজিবাজারের টার্নওভার এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে হঠাৎ সাড়ে ৬০০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক কাজ করছে। তারা বিনিয়োগ করবে কি করবে না, বা কোথায় বিনিয়োগ করবে এবং কী দামে কিনবে, এসব নিয়ে আস্থাহীনতায় রয়েছে। এছাড়া কিছুদিনের মধ্যে সূচক ৫০০ থেকে ৭০০ পয়েন্টের মতো বেড়েছিল। সূচক এমন বাড়ার পেছনে ব্যাংক খাতের ভ‚মিকা বেশি ছিল। এতে যাদের এক্সপোজার সীমা ছিল তারা সে সীমার কাছাকাছি চলে এসেছিল। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি শুরু হয়ে যায়। আগে বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর মাসিক বিনিয়োগের খবর নিতো। এখন কেউ এক্সপোজার সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে কি না প্রতিদিন সে খবর নেয়। এটি একটি মনস্তাত্তি¡ক চাপ। তাই সবাই এ বিষয়ে একটু দ্বিধাগ্রস্ত যে, ব্যাংক আবার বিনিয়োগ করতে পারবে কি না? তিনি বলেন, আমাদের বাজারে ভালো শেয়ারের অভাব রয়েছে। ব্যাংক খাত বাদে অন্যান্য খাতে খুব বেশি ভালো শেয়ার নেই। বাজার মূলধনের ৩৫-৪০ শতাংশই ব্যাংক খাতের। সামনে আরও কিছু ব্যাংক তালিকাভুক্ত হবে। কিন্তু অন্যান্য খাতেও অনেক ভালো কোম্পানি আছে যারা এখনও বাজারে তালিকাভুক্ত নয়। তাদের বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে বাজারে তালিকাভুক্ত করতে মার্চেন্ট ব্যাংকারদের গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করতে হবে।

মো. মাহমুদ হোসেন বলেন, বিগত সময়ের তুলনায় বর্তমানে পুঁজিবাজারে যথেষ্ট মেধাবী ও শিক্ষিত বিনিয়োগকারীরা এসেছেন। এটি বাজারের জন্য ইতিবাচক। তবে এখনও আমাদের শেয়ারবাজারটি অনেক ভালো পোর্টফলিও নিয়ে সেভাবে সমৃদ্ধ নয়, যে কারণে ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক খাত একটি বড় পরিমাণ পোর্টফলিওর অংশ ধরে রেখেছে। তাছাড়া অধিকাংশ বিনিয়োগকারী খুব বেশি অ্যানালিসিস করেন না। তারা মূলত সূচকের গতিবিধি দেখে শেয়ার কেনা-বেচা করেন। যখনই তারা দেখলেন ব্যাংকের দর সংশোধিত হচ্ছে, তখনই ভীত হয়ে অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ কমিয়ে দিলেন। আমাদের পুঁজিবাজারে ব্যাংক খাতের মতো আরও দু-তিনটি ভালো খাত যদি থাকতো তাহলে বাজারের এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যেত। তিনি বলেন, বাজারে ভালো কোম্পানি আরও তালিকাভুক্ত করা দরকার। তাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আনা দরকার। সরকারি শেয়ারগুলো পুঁজিবাজারে ছাড়া জরুরি। যদিও অনেক দিন ধরে বাজারে সরকারি শেয়ারগুলো ছাড়ার কথা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে ওপর মহল থেকে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই। সরকারি শেয়ারগুলো ছাড়লে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও বাড়বে। তাই এ বিষয়ে সবার গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

শ্রুতি লিখন: রাহাতুল ইসলাম