Print Date & Time : 3 August 2025 Sunday 10:27 pm

ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে হবে

 

প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে  শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধপুঁজিবাজারে নানা সংকট রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সংকট বাজার খুব ছোট। বিনিয়োগকারী কম। ভালো শেয়ার কম। আইপিওতে ভালো কোম্পানি আসে না। যার কারণে পুঁজিবাজারের প্রতি মানুষের আকর্ষণও কম। নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইপিওকে আরও আকর্ষণীয় করা চেষ্টা করছে। এটি বাস্তবায়িত হলে ভালো কোম্পানি বাজারে আসতে চাইবে। বাজারও সমৃদ্ধ হবে। গতকাল বুধবার এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। ডিবিএ’র সভাপতি আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভ্যানগার্ড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের এমডি ওয়াকার এ চৌধুরী।

ওয়াকার এ চৌধুরী বলেন, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে ইচ্ছুক কোম্পানিগুলোকে আগে দুই বছরের ব্যালান্স শিট এবং প্রফিট দেখাতে হতো। বর্তমান তা পরিবর্তন করে নিয়ম হয়েছে যেদিন আবেদন করবে, তার আগের বছরের পরিশোধিত করের প্রকৃত

মুনাফা দেখাতে হবে এবং নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ইতিবাচক হতে হবে। এমন সিদ্ধান্তে ভালো কোম্পানিগুলো হয়তো বাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হবে। আরও কিছু পরিবর্তন এসেছে, যা পুঁজিবাজারের জন্য সুফল বয়ে আনবে। এর মধ্যে আইপিওতে দুই শতাংশের অধিক শেয়ারের জন্য কোনো বিনিয়োগকারী আবেদন করতে পারবে না; যা আগে ১০ শতাংশ ছিল। অন্যদিকে উপযুক্ত বিনিয়োগকারীরা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। এ পরিবর্তনের ফলে আমরা আশা করছি, আইপিওতে একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। একই সঙ্গে বুক বিল্ডিংয়েও কিছু পরিবর্তন আমরা লক্ষ করছি। তা হচ্ছে কোম্পানিগুলোকে বুক বিল্ডিংয়ে যেতে হলে ৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করতে হবে। অন্যথায় বুক বিল্ডিংয়ের আওতায় যাওয়া সম্ভব নয়। পরিশোধিত মূলধন সর্বনি¤œ ৩০ কোটি টাকা হতে হবে, যা আগে ১৫ কোটি টাকা ছিল। এসব সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারের জন্য অবশ্যই ভালো বলতে হবে। মার্কেটের উন্নয়নে সহায়তা করবে বলে আমি মনে করি। তাছাড়া ২০১০-এর পর থেকে ক্যাপিটাল মার্কেটে যে পরিবর্তনগুলো এসেছে, তা আসলেই সাধুবাদ দেওয়ার মতো। তিনি বলেন, ২০১০-এর দিকে আমাদের জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) ছিল ১৫০ বিলিয়ন ডলার এবং মার্কেট ক্যাপিটাল ছিল ৪৮ বিলিয়ন। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬.৫ শতাংশ। বর্তমানে আমাদের জিডিপির আকার ২৫০ বিলিয়ন ডলার এবং মার্কেট ক্যাপিটাল ৪২ বিলিয়ন। কাজেই অর্থনীতির উন্নতি হলেও ক্যাপিটাল মার্কেট আরও পিছিয়ে পড়েছে। এখন আমাদের বন্ড মার্কেট শক্তিশালী হওয়া খুবই বাঞ্ছনীয়। কারণ ইক্যুইটি মার্কেট যদি খারাপ থাকে তাহলে বন্ড মার্কেটে বিনিয়োগকারীরা টাকা বিনিয়োগ করতে পারবেন। দুটি কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আমাদের দেশে বিনিয়োগ করতে চাইলেও পারছেন না। তা হচ্ছে,  বৈচিত্র্যপূর্ণ পণ্য না থাকা এবং ইস্যু সাইজ নেই। এ কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারের প্রতি আগ্রহ কম। তিনি আরও বলেন, ভালো কিছু কোম্পানি পুঁজিবাজারে আনতে হলে করপোরেট ট্যাক্সের পরিমাণ আরেকটু কমানো দরকার। আর ভালো কোম্পানির অভাবেই বাজার এমন অস্বাভাবিক আচরণ করছে।

তিনি বলেন আমরা শুনেছিলাম রবি বাজারে আসবে কিন্তু করপোরেট ট্যাক্সের কারণে তারা আসছে না। কাজেই সম্ভাবনাময় পুঁজিবাজার গড়ে তোলার জন্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারের সহায়তা থাকলে বাজারে ভালো কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করা এবং একটি সম্প্রসারিত বাজার গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

 

শ্রুতি লিখন: রাহাতুল ইসলাম