Print Date & Time : 27 August 2025 Wednesday 2:13 pm

ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে স্বাবলম্বী হওয়ার পথে

আলমগীর হোসেন: যে কোনো উদ্যোগের শুরুতে আসে অনেক বাধা-বিপত্তি। এসব গায়ে না মেখে লেগে থাকলে সফল হওয়া যায়। যারা সফল হন, তাদের অনুসরণ করলে আরও নতুন উদ্যোগ শুরু হয়। নানা খাতের সেসব সফল উদ্যোক্তাকে নিয়ে ধারাবাহিক আয়োজন

শারীরিক প্রতিবন্ধী মানুষটি ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। তবে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহে মোটেও আগ্রহ ছিল না তার। এজন্য সব সময় স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। সেই স্বপ্ন বারবার ব্যর্থ হতো। তবু দমে যাওয়ার পাত্র নন তিনি। তাই স্বপ্নপূরণে শুরু করেন ভেড়া পালন। পৌঁছান অভীষ্ট লক্ষ্যে।

এতক্ষণ বগুড়ার গাবতলী উপজেলার চক সিকান্দার গ্রামের বাসিন্দা বাদশা মিয়ার কথাই বলা হচ্ছিল। ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়ার প্রস্তাব পান বগুড়ার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) গ্রাম উন্নয়ন কর্ম (গাক) থেকে। সংস্থাটির ‘ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্প’-এর কোঅর্ডিনেটর সাইফুল ইসলাম তাকে এই প্রস্তাব দেন। সত্যিকারের বাদশাহ হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। পথ দেখান উপার্জনের।

গাক-এর প্রস্তাবে ভীষণ অবাক হন বাদশা মিয়া। কেননা ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দিলে কীভাবে চলবে তার সংসার? বিকল্প আয়ের উৎস কেমন হবে? সফল হতে পারবেন? তাছাড়া ভেড়া পালনের টাকা পাবেন কোথায়? এমন ভাবনাগুলো ঘুরপাক খেতে থাকে তার মনে। এসব প্রশ্নের উত্তর বাতলে দেন কোঅর্ডিনেটর সাইফুল ইসলাম। তিনি গাক-এর পক্ষ থেকে বাদশা মিয়াকে এক লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা বলেন।

এরপর আর ভিক্ষুকের বেশে দেখা যায়নি বাদশাকে। শর্তসাপেক্ষে গাক থেকে পাওয়া এক লাখ টাকার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয় সংস্থাটি। এজন্য এক বছর পর্যবেক্ষণে রাখা হয় তাকে। পরে গাক-এর দেওয়া জমিতে তিনি চাষাবাদ শুরু করেন। একই সঙ্গে চলে ভেড়া লালন-পালন।

‘ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্প’ গাক-এর নির্বাহী পরিচালক ড. আলমগীর হোসেন বলেন, পল্লি কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) অর্থায়নে প্রাথমিকভাবে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে এটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বগুড়ার গাবতলী ও সারিয়াকান্দি উপজেলায় তারা ১২ পুরুষ ও নারী ভিক্ষুককে এক লাখ টাকা ঋণ দিয়েছেন। এই টাকার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য তারা যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছেন। ফলে উল্লিখিত ব্যক্তিরা ভিক্ষাবৃত্তি থেকে সরে এসেছেন, স্বাবলম্বী হয়েছেন।

বগুড়া