Print Date & Time : 29 August 2025 Friday 1:01 am

ভিসা নিষেধাজ্ঞার গুঞ্জনে অস্থিরতা কাটছেই না পুঁজিবাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্র করে বাংলাদেশিদের জন্য নতুন ভিসানীতির ঘোষণা দিয়ে তা প্রয়োগ শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়ছে দেশের পুঁজিবাজারে। ভিসানীতি কেন্দ্র করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে এখন মূল আলোচনার বিষয় এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা ইস্যু। এ কারণে আবার অস্থির হয়ে উঠেছে দেশের পুঁজিবাজার।

গতকাল রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন বাড়লেও সূচকের বড় পতন হয়েছে। এদিন বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দর ছিল অপরিবর্তিত। পাশাপাশি দাম বেড়েছে এমন কোম্পানির সংখ্যা ছিল নামমাত্র।

ডিএসইর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত মাসের লেনদেনে হাজার কোটির ঘর স্পর্শ করতে পারেনি একদিনও। মাসজুড়ে ১৮ কার্যদিবসে লেনদেন হয়, যার গড় লেনদেন ছিল ৬২৮ কোটি ১৩ লাখ ১১ হাজার টাকা। মাসটির সর্বশেষ কার্যদিবসে সর্বনি¤œ লেনদেন হয়। এদিন ৪২২ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল করেন বিনিয়োগকারীরা।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল পেপার অ্যান্ড প্রিন্টিং খাতের ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। এদিন খাতটিতে মোট ছয়টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের চারটির দাম বেড়েছে। দ্বিতীয় স্থানে ছিল চামড়া খাত। খাতটির ৫০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিল খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত। গতকাল টেলিকমিউনিকেশন, করপোরেট বন্ড, আর্থিক খাত ও সিরামিক খাতের শেয়ারদর বৃদ্ধি বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।

গতকাল বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপ থাকায় আইটি খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটির ৯০ দশমিক ৯১ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। শেয়ারদর কমায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিমা খাত। খাতটির ৯০ দশমিক ২৪ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। তৃতীয় স্থানে ছিল বিবিধ খাত। খাতটির ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে।

অন্যদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিমা খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৮ দশমিক ৮০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৬ দশমিক ২২ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা পেপার অ্যান্ড প্রিন্টিং খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। সাত দশমিক ৬৩ শতাংশ লেনদেন হওয়া বিবিধ খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।

ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া ৩০২টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৭টির, দাম কমেছে ১২০টির আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪৫টি কোম্পানির শেয়ারের। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৯ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ২৬৪ দশমিক ৯০ পয়েন্টে। ডিএসইর অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ২ দশমিক ২২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৫৭ দশমিক ৩৭ পয়েন্টে। ডিএস৩০ সূচক ৪ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১৩৫ দশমিক ৬৯ পয়েন্টে।

এদিন ৩০২টি প্রতিষ্ঠানের আট কোটি ৮৭ লাখ ৬৮ হাজার ৬১৩টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে, যা টাকার অঙ্কে ৫৩১ কোটি ৯৩ লাখ ১৮ হাজার টাকার। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪২২ কোটি ৩০ লাখ ৪ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড। অর্থাৎ আগের কার্যদিবসের তুলনায় টাকার অঙ্কে লেনদেন বেড়েছে।

ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল সোনালী পেপারের শেয়ার। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। তৃতীয় অবস্থানে ছিল খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার। এরপরে ছিল যথাক্রমে ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, জেমিনি সি ফুড, ফুয়াং ফুড, রয়েল টিউলিপ সি পার্ল, অ্যাপেক্স ফুডস, ফু-ওয়াং ফুড, লাফার্জহোলসিম ও টিবি২ওয়াই ০৯২৫ বন্ডের শেয়ার।

অন্যদিকে সিএসইয়ের প্রধান সূচক ২৭ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৫৩ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৪৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৭টির, কমেছে ৭০টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৯টির।

দিন শেষে সিএসইতে ১১ কোটি ৮৪ লাখ ৬৬ হাজার ৪৫৪ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫০ কোটি ৮৩ লাখ ৩৫ হাজার ৭৭২ টাকার শেয়ার।