প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে যমুনা নদীতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আশঙ্কাজনক হারে পানি বৃদ্ধির কারণে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের মাটিকাটা বাসস্ট্যান্ড মোড় আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রায় ৩ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত শত শত পরিবার। পরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবরোধটি তুলে নেয় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে নিকরাইল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন মণ্ডল ও স্থানীয় কয়েকটি এলাকার ইউপি সদস্যরা মানববন্ধনে উপস্থিত হন। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলাল হোসেন আসেন। তিনি তাৎক্ষণিক ভাঙনকবলিত এলাকায় আরও দ্রুত সময়ের মধ্যে জিও ব্যাগ ফেলার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় ভুক্তভোগীরা। অবরোধের ফলে প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী সোনা মণ্ডল বলেন, কয়েকদিন ধরে এই এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনে আমাদের বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। আমরা এ এলাকার অসংখ্য পরিবার এখন মানবেতর জীবনযাপন করছি। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নিজ নিজ বাড়ি রক্ষায় তদবির করে জিও ব্যাগ ফেলছে। এ নিয়ে কিছু বলাও যাচ্ছে না। এলাকায় ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
নিকরাইল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন মণ্ডল বলেন, প্রতি বছর পাটিতাপাড়া, মাটিকাটা, কোনাবাড়ি, পলশিয়া, দোভায়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা যায়। এবারও ব্যাপক হারে নদীর তীর ভাঙছে। এর ফলে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে অসংখ্য ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙন রোধে দ্রুত সময়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা না হলে অচিরেই নদীপাড়ের ওই গ্রামগুলো বিলীন হয়ে যাবে।
ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন জানান, ভাঙন রোধে ও স্থায়ী বাঁধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করছিল উত্তর পাটিতাপাড়া এলাকার ভাঙনকবলিত মানুষ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাৎক্ষণিক ভাঙন রোধে আরও দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া ও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন। যারা বসতভিটা ও ঘর-বাড়ি হারিয়েছে তাদের তালিকা করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। বিষয়টি জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে।