ভেষজ শিল্পের উন্নয়নে ওষুধ প্রশাসনে আলাদা সেল গঠনের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘দেশের স্বাস্থ্য সেবায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার পরও ভেষজ ও ইউনানি শিল্প সংকুচিত হয়ে আসছে। এই শিল্পের উন্নয়নে ওষুধ প্রশাসনে আলাদা সেল গঠন জরুরী হয়ে পরেছে।’

বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হার্বাল, ইউনানি মেডিসিন ও ন্যাচারাল প্রোডাক্টস এর উন্নয়ন ও রপ্তানি বিষয়ক এফবিসিসিআই’র স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম বৈঠকে এ কথা বলেন বক্তারা।

তারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে এশিয়ার কিছু দেশ ও আফ্রিকার ৮০ শতাংশ মানুষ এখনো ইউনানি, হোমিওপ্যাথি ও ভেষজ ওষুধের ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ ইউনানি ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে থাকেন। ইউরোপে ৩৫ থেকে ৪৫ শতাংশ মানুষ ভেষজ পণ্যের প্রতি আস্থাশীল। দিন দিন প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি ফুড সাপ্লিমেন্টের জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

তারা বলেন, বিশ্বব্যাপী হার্বাল ও ইউনানি পণ্যের বাজার ১৪১ বিলিয়ন ডলার। প্রতি বছরে এ বাজার ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। কিন্তু বিপুল চাহিদা থাকার পরেও আইনি জটিলতায় হার্বাল ও ইউনানি পন্য রপ্তানি করা যাচ্ছে না। কমিটির সদস্যদের অভিযোগ, সারাবিশ্বে এসব পণ্যকে ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট বা ফুড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করার কারণে এসব পণ্য রপ্তানি করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

এসময় ওষুধ প্রশাসনে আলাদা সেল গঠিত হলে ইউনানি ও ভেষজ পণ্যের এসব সমস্যা সমাধান সহজ বলে দাবি করেন কমিটির সদস্যরা।

বক্তারা বলেন, ইউনানি ও ভেষজ পণ্যের ৯০ শতাংশ কাঁচামালই আমদানি করতে হয়। দেশে ওষুধি গাছের চাষ বাড়াতে পারলে একদিকে আমদানি নির্ভরতা কমবে, আরেকদিকে রপ্তানির সুযোগও তৈরি হবে। পতিত জমিতে কিংবা অর্থনৈতিক অঞ্চলে সরকারি বা পাবলিক -প্রাইভেট যৌথ উদ্যোগে হার্বাল গার্ডেন প্রতিষ্ঠার সুপারিশও আসে বৈঠকে। এছাড়াও মেডিক্যাল কলেজের পাঠ্যক্রমে ইউনানি ও হার্বাল চিকিৎসাকে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান এ খাতের উদ্যোক্তারা।

বৈঠকে প্রধান অতিথি এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, এ শিল্পের উন্নয়নে কমিটির সুপারিশগুলো নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে আলোচনা করবে এফবিসিসিআই। এজন্য কমিটিকে এ শিল্পের সম্ভাবনা, সমস্যা-সম্ভাব্য সমাধান বিষয়ে একটি সুপারিশ তৈরির আহ্বান জানান তিনি।

ইউনানি ও হার্বাল পণ্যের প্রচারে দেশের প্রতিটি জেলায় ৭ দিন ব্যাপী মেলা আয়োজনের প্রস্তাব দেন কমিটির ডিরেক্টর ইন চার্জ ও এফবিসিসিআই’র পরিচালক মোঃ রেজাউল ইসলাম মিলন। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে এসব পণ্যের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ানো সম্ভব হবে।

কমিটির চেয়ারম্যান রকিব মোহাম্মদ ফখরুল জানান, ইউনানি শিল্পের উন্নয়নে কর্মপন্থা প্রণয়নে একটি সাব কমিটি গঠন করা হবে।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক উপমন্ত্রী ও মুন্সী গ্রুপের চেয়ারম্যান এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী, এফবিসিসিআই’র মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক প্রমুখ।