নিজস্ব প্রতিবেদক : উৎসবমুখর, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনায় ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্বাচন। বিজিএমইএ ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচনী লড়াইয়ে ছিল দুই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ‘সম্মিলিত পরিষদ’ ও ‘ফোরাম প্যানেল’। সেই সঙ্গে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে ঐক্য পরিষদ। যদিও তারা পূর্ণ প্যানেলে নয়, অংশ নিয়েছিলেন ছয়জন প্রার্থী।
ফলে গতকাল শনিবার দেশের পোশাক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ২০২৫-২৭ মেয়াদের কার্যনির্বাহী কমিটির ৩৫ জন পরিচালক নির্বাচনে তিন প্যানেলে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মোট ৭৬ জন। গতকাল রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভোট গণনা চলছিল।
বিজিএমইএ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামে তাদের নতুন কর্মকর্তা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে এবং কোনো বিরতি ছাড়াই বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে। রাজধানী ঢাকা এবং বন্দরনগরী চট্টগ্রামে যথাক্রমে ৮৮ দশমিক ২১ শতাংশ এবং ৮৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন।
নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করে একটি স্মার্ট ও ফিউচার ফিট বিজিএমইএ গঠনের প্রতিশ্রুতি ছিল সম্মিলিত পরিষদ। এছাড়া একটি বাস্তবভিত্তিক, সময়োপযোগী এবং সদস্যদের অংশগ্রহণে গঠিত রোডম্যাপ নিয়ে কাজ করতে চায় সম্মিলিত পরিষদ। তাদের নির্বাচনী সেøাগান ছিলÑ অর্জন সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ এক সঙ্গেই সম্ভব। সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার চৈতী গ্রুপের আবুল কালাম।
অন্যদিকে নির্বাচনে জয়লাভ করে একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও কর্মক্ষম বিজিএমইএ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ফোরাম প্যানেল। এছাড়া শ্রমশক্তিকে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উপযুক্ত করে গড়ে তোলার অঙ্গীকার নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে রাইজিং গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নেতৃত্বাধীন ফোরাম প্যানেল।
এছাড়া এসএমই ও নন-বন্ডেড শিল্প খাতকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান, রুগ্ন শিল্পের জন্য একটি বিস্তারিত এক্সিট পলিসি প্রণয়ন এবং বৈশ্বিক ট্যারিফ যুদ্ধ মোকাবিলায় সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন এই প্যানেলের নেতারা।
নির্বাচনকেন্দ্রিক দুই জোট ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ছয়জন, তারা ঐক্য পরিষদ নামের একটি খণ্ডিত প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে মূল লড়াইটি হয়েছে সম্মিলিত ও ফোরাম, এই দুই প্যানেলের মধ্যেই।
বিজিএমইএ নির্বাচনে এবার মোট ভোটার ১ হাজার ৮৬৪ জন। এর মধ্যে ঢাকার ভোটার ১ হাজার ৫৬১ এবং চট্টগ্রামের ভোটার ৩০৩ জন।
প্রসঙ্গত, বিজিএমইএতে নির্বাচনকেন্দ্রিক দুটি প্যানেল ‘ফোরাম’ ও ‘সম্মিলিত পরিষদ’। এই দুই প্যানেল থেকেই নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়ে থাকে। গত বছরের মার্চে বিজিএমইএ’র পরিচালনা পর্ষদের (২০২৪-২৬) নির্বাচনে সবক’টি পদে জয়লাভ করেছিল সম্মিলিত পরিষদ। যদিও স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে পদত্যাগ করেন বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট আব্দুল মান্নান কচি।