ভোমরায় চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি

 প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের বিপরীতে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা কাস্টমস শুল্ক স্টেশনের পার্শ্ববর্তী বেসরকারি পার্কিংগুলোয় সিরিয়ালের নামে চাঁদাবাজি বন্ধের প্রতিবাদে ভোমরা বন্দরে গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো মানববন্ধন ও তিন ঘণ্টা কর্মবিরতি পালিত হয়েছে।

ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি ও প্রতিবাদ সমাবেশে কার্যত বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকে। ভোমরা স্থলবন্দরের আটটি সংগঠন এ আন্দোলন ও কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে।

গত শনিবার প্রথম দিনের কর্মসূচির পর ওইদিন রাতে ভারতের ঘোজাডাঙ্গায় চাঁদা দিয়ে ভোমরা বন্দরে ৫৩টি পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করার অভিযোগে মালামাল খালাস করেননি শ্রমিকরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, শনিবার দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি ও মানববন্ধন পালনের পর গতকাল রোববার তিন ঘণ্টা কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এছাড়া আজ সোমবার চার ঘণ্টা কর্মবিরতি ও মানববন্ধন এবং ১ ফেব্রুয়ারি থেকে লাগাতার কর্মবিরতি পালনের  ঘোষণা করা হয়।

ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন বলেন, ভারতের ঘোজাডাঙ্গায় কাস্টমস শুল্ক স্টেশনের পার্শ্ববর্তী বেসরকারি পার্কিংগুলোয় সিরিয়ালের নামে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে, যা প্রতি পণ্যবাহী ট্রাকের জন্য ৩০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। চাঁদা না দিলে সিরিয়ালের জন্য ভারতের ওপারে ২৫ দিন থেকে দুই মাস পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে অপেক্ষা করতে হয়। ফলে সময় ক্ষেপণের কারণে যেমন বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে, তেমনি পণ্য নষ্ট হয়ে অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এ বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা। ফলে ভারত থেকে আনা আমদানিজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশের অন্যান্য বন্দরের তুলনায় এ বন্দরে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানিকারকরা এ বন্দর ত্যাগ করছেন। ফলে ভোমরা স্থলবন্দর থেকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এ স্থলবন্দরটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হবে। তাই ঐক্যবদ্ধভাবে এ চাঁদাবাজি বন্ধের কোনো বিকল্প নেই। চাঁদাবাজি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লাগাতার কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রতিদিন ঘোজাডাঙ্গা পার্কিংয়ে সিরিয়াল আগে দেয়ার জন্য দৈনিক ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করছে ভারতীয় পারের একটি সিন্ডিকেট, যার যোগসাজশে আছেন ভোমরা বন্দরের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। ফলে বাংলাদেশি আমদানিকারকরা সিরিয়ালের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করার জন্য লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে চলছেন।