Print Date & Time : 19 August 2025 Tuesday 4:57 am

ভ্যাকসিন নিশ্চিতকরণে খুলতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

আগামী দুই মাসের মধ্যেই আশা করা যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেবে সরকার। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এত দিন বলে আসছিল, ভ্যাকসিন দিয়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এত দিন টিকার দোহাই দিচ্ছিল। এখন টিকা এসে গেছে কিংবা আসার পথে আছে। আমরা জানি ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং আবাসিক- অনাবাসিক হলের শিক্ষার্থীরাও ইতোমধ্যে ভ্যাকসিন পেতে শুরু করেছে। অধিকাংশ প্রথম ডোজ এবং কিছু সংখ্যক দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়ে গেছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিক্ষার্থীরাও ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন শুরু করেছেন। অতএব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো না খোলার কোনো যুক্তি নেই। শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য ঝুঁকি বেশি। আশা করা যায় সরকার প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যবস্থা করবে। এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক পর্যায়ের কলেজগুলো। এরপর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে। সব শেষে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিলম্ব হলেও সরকার প্রয়োজনীয় বিভিন্ন দেশ থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে পারছে, তা অবশ্যই আশার কথা। যত দ্রুত সম্ভব সবাইকে ভ্যাকসিন আওতায় আনতে স্বাস্থ্য বিভাগ প্রতি মাসে এক কোটি ডোজ দেয়ার পরিকল্পনা করছে।

টিকাদান কর্মসূচি ব্যাপকভাবে জোরদার করতে হবে।  প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশেই করোনার টিকা উৎপাদন করা হবে। সে ক্ষেত্রে আমরা আশা করতে পারি, টিকার অভাব হবে না। সরকার ইতোমধ্যে ২৫ বছরের ওপরের সবাইকে টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৮ আগস্ট থেকে ভোটার কার্ড থাকলেই ১৮ বছর থেকেই সবাই ভ্যাকসিন নিতে পারবে। এ ছাড়া সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও জরুরি সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যদেরও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকা দেয়া হচ্ছে। স্কুল,  কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সরকারী চাকরিজীবী, ব্যাংকার, পুলিশ, সেনাবাহিনী, কৃষক, শ্রমিক, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ দেশের সব নাগরিকও আছেন অগ্রাধিকারের তালিকায়।

গত ২ মাস ধরে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণে লকডাউনের কবলে ছিল দেশ। কিছু দিনের মধ্যে আশা করা যায়, বিধিনিষেধ পুরোপুরি উঠে না গেলেও শিথিল হবে। কিন্তু দেশের হাজার হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের লাখ লাখ শিক্ষার্থীর কী হবে? তারা কবে ক্লাসে-পরীক্ষায় ফিরে যেতে পারবে? শিক্ষা মন্ত্রণালয় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত আকারে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রত্যেক বিভাগের জন্য তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা হবে। বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও চতুর্থ বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হবে না। জেএসসি ও পিএসসির বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা না খোলার বিষয়ে যখন সরকার দ্বিধাদ্বন্দ্বে^, তখন ইউনেসকো মুখপাত্র জেমস এল্ডার কী বলেছেন! জেনেভায় গত কিছুদিন আগে তিনি বলেছেন, এভাবে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ চলতে পারে না। বিভিন্ন দেশের সরকার কভিড-১৯ সংকট মোকাবিলায় এবং এ রোগের বিস্তার যতটা সম্ভব কমিয়ে রাখার জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া পর্যন্ত স্কুল খোলার জন্য অপেক্ষা করানো উচিত নয়। এদিকে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর ও ইউনেসকোর মহাপরিচালক অড্রে অ্যাজুল যৌথ বিবৃতিতে বলেন, করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব শুরু হওয়ার পর ১৮ মাস পেরিয়ে গেছে। অতএব অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হোক।  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় লাখ লাখ শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বিঘিœত হচ্ছে।

সাজিদ রাজু

শিক্ষার্থী, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়