Print Date & Time : 30 July 2025 Wednesday 9:10 am

মজুরি প্রবৃদ্ধি এখনও দুর্বল, চাকরি হারানোর শঙ্কায় কর্মীরা

শেয়ার বিজ ডেস্ক: কভিডের নতুন ডেল্টা ধরনের সংক্রমণে হুমকিতে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি। দেশটিতে শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির হার এখনও বেশ দুর্বল অবস্থায়। এদিকে লকডাউনের কারণে বন্ধ রয়েছে সিডনিসহ গুরুত্বপূর্ণ শহরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম। এজন্য চাকরি হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন অনেক শ্রমিক। সার্বিক অবস্থায় দেশটির অর্থনীতির ওপর কালো মেঘ ঘিরে ফেলছে। খবর: গার্ডিয়ান, সিএনবিসি।

কভিডের ডেল্টা সংক্রমণের আগেও অস্ট্রেলিয়ায় মজুরি বৃদ্ধি খুবই দুর্বল ছিল, যদিও শ্রমিকের চাকরি হারনোর শঙ্কা এখনও রয়ে গেছে। সম্প্রতি নতুন দুটি সমীক্ষা বলছে, অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতির সুদিন আসতে বেশ দেরি।

সর্বশেষ দেশটির পরিসংখ্যান ব্যুরোর (এবিএস) তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক (এপ্রিল-জুন) মজুরি প্রবৃদ্ধি শূন্য দশমিক চার শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা পরবর্তী দুই  প্রান্তিকে অর্থাৎ বছর শেষে আরও কমে শূন্য দশমিক ছয় শতাংশে নেমে আসবে। আর সরকারি খাতে মজুরি প্রবৃদ্ধি গত ২৪ বছরের মধ্যে ধীরগতি।

অন্যদিকে, ব্যক্তি খাত তথা বেসরকারি খাতের জন্যও দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছে। ব্যক্তি খাতের মাত্র তিনটি ক্যাটেগরিÑনির্মাণ, অন্যান্য পরিসেবা ও পেশাগত, বৈজ্ঞানিক এবং প্রযুক্তিগত পরিসেবায় মাত্র দুই শতাংশ মজুবি বৃদ্ধি পেয়েছে।

অর্থনীতির চাকা সচল করতে মজুরি প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি এবং শ্রমবাজারকে শক্ত করতে হবে বলে জানিয়েছন অর্থনীতিবিদরা। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বড় দুটি শহর কভিডের কারণে লকডাউনে থাকায় বেকারত্বহার আরও বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল  অর্থনীতিবিদরা।

সম্প্রতি দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্য রিজার্ভ ব্যাংক অস্ট্রেলিয়া এক নতুন গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে। ওই গবেষণায় বলা হয়, বৃহত্তর অর্থনীতিতে চাকরি হারানোর ভয়কে প্রভাবিত করছে। এর ফলে বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সভায় অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নতুন এক নীতিমালা প্রণয়নের কথা সুপারিশ করা হয়। যেখানে কভিডের লকডাউনের ক্ষতি পুষিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাইছে, নতুন নীতির মাধ্যমে ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড কিনতে। কারণ বন্ডের দামও এখন গত মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ।

এর আগে আগস্টের শুরুতে এক সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সপ্তাহে চার বিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলারের (২.৯৪ মার্কিন ডলার) ট্রেজারি বন্ড কিনবে। 

কভিড মহামারিতে বেতনভুক্ত চাকরি অথবা ঘণ্টাকালীন কাজের এক দশমিক দুই মিলিয়ন লোক চাকরি হারিয়েছে, যা মোট কর্মক্ষম জনশক্তির ৯ শতাংশের বেশি। আর অর্থনীবিদদের ধারণা, বেকারত্বহার বর্তমানের (এপ্রিল-জুন) ৪.৯ শতাংশ থেকে বেড়ে সেপ্টেম্বর শেষে ৫.৬ শতাংশে ওঠে আসবে। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভবিষ্যদ্বাণী বছর শেষে বেকারত্বহার পাঁচ শতাংশে গিয়ে ঠেকবে।

সংশ্লিষ্টদের ধারণা, কভিড বেড়ে যাওয়ায় দেশটির পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলে লকডাউনের কারণে পরবর্তী সমীক্ষায় বেকারত্ব হার আরও বাড়বে। যদিও দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, বছরের প্রথম প্রান্তিকের মতোই এ বছরের শেষের প্রান্তিকের অর্থনীতি সম্প্রসারিত হবে।

আর লেবার’স ট্রেজারির মুখপাত্র জিম চেলমারস বলেন, মরিসন সরকারের নিজস্ব বাজেট্রে শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির বিষয় অনুপস্থিত। ফলে শ্রমিকের জীবনযাপন আরও কষ্টসাধ্য হবে। তিনি বলেন, যখন জীবনযাত্রার খরচ মজুরি বৃদ্ধির চেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এবং পরিবারগুলো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে শক্তি খাটাবে, তখন তাদের মানবিক জীবন কাটাতে বাধ্য করবে।

এদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আজ বৃহস্পতিবার জুলাইয়ের শ্রমশক্তির প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। যেখানে চাকরিবাজারে পূর্ব-উপকূলীয় নিউ সাউথ ওয়েলসের লকডাউনের প্রভাব লক্ষ করা যাবে।

আর আগস্টের প্রতিবেদন আগামী মাসে প্রকাশিত হবে। যেখানে বেকারত্বের চরম অবস্থা ফুটে উঠতে পারে বলে অর্থনীতিবিদদের ধারণা।