নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ডিসেম্বরে রাজধানীর উত্তরা (দিয়াবাড়ী) থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চালু হচ্ছে মেট্রোরেল। আর মতিঝিল পর্যন্ত চালু হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। এক্ষেত্রে মতিঝিল থেকে শাহবাগ মেট্রোরেলে যাতায়াতে ভাড়া পড়বে ২০ টাকা, কারওয়ান বাজার ও ফার্মগেট পর্যন্ত ৩০ টাকা। এছাড়া কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ পর্যন্ত মেট্রোরেলের ভাড়া পড়বে ৬০ টাকা।
দিয়াবাড়ী থেকে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত মেট্রোরেলের ভাড়ার হার চূড়ান্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। গত বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপনটি ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। মেট্রোরেল আইন ২০১৫-এর ধারা ১৭ অনুযায়ী, এমআরটি লাইন ৬-এর এ ভাড়া নির্ধারণ করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।
ভাড়ার হিসাব কমলাপুর থেকে ধরলেও বর্তমানে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ চলছে। তবে এটি কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করা হবে। এ হিসাবে মতিঝিল থেকে সচিবালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহবাগ পর্যন্ত ভাড়া ২০ টাকা, কারওয়ান বাজার ও ফার্মগেট গেলে ৩০ টাকা, বিজয় সরণি ৫০ টাকা, আগারগাঁও ও শেওড়াপাড়ায় ৫০ টাকা, কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ পর্যন্ত ৬০ টাকা, মিরপুর-১১ পর্যন্ত ৭০ টাকা ও পল্লবী ৮০ টাকা। আর উত্তরা সাউথ ও উত্তরা সেন্টার স্টেশনের জন্য ৯০ টাকা এবং উত্তরা নর্থ স্টেশন পর্যন্ত গেলে গুনতে হবে ১০০ টাকা।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যাত্রীপ্রতি কিলোমিটারে পাঁচ টাকা এবং সর্বনি¤œ ভাড়া ২০ টাকা। দিয়াবাড়ী তথা উত্তরা নর্থ স্টেশন থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটারের ভাড়া ১০০ টাকা। স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করলে ১০ শতাংশ ছাড় সুবিধা পাবেন যাত্রীরা। যেসব যাত্রী সাপ্তাহিক, মাসিক, পারিবারিক কার্ড ব্যবহার করবেন, তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা থাকবে। এছাড়া যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিনা মূল্যে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করতে পারবেন এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা প্রতিবার ভ্রমণে বিশেষ ছাড়ের সুবিধা পাবেন।
জানা গেছে, ডিসেম্বরেই চালু হবে মেট্রোরেলের এমআরটি ৬-এর দিয়াবাড়ী-আগারগাঁও অংশ। ট্রেন ঘোরানোর জায়গা নেই বলে ফার্মগেট পর্যন্ত এখনই চালু করা যাচ্ছে না। যাত্রীদের সুবিধার্থে দিয়াবাড়ী ও আগারগাঁও থেকে বিআরটিসির বাস সুবিধা থাকবে। মেট্রোরেলে যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু হলে ভোরেই দুদিক থেকে যাত্রা করবে। প্রাথমিকভাবে রাত সাড়ে ১১টায় সর্বশেষ ট্রেন ছাড়বে। শুরুতে দৈনিক চার লাখ ৮৩ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। এজন্য বসবে অটোমেটিক ফেয়ার কালেকশন সিস্টেম সফটওয়্যার। যাত্রীদের জন্য আধুনিক ও অনলাইনভিত্তিক ভাড়া পরিশোধের ব্যবস্থা থাকছে।
মেট্রোরেলে দু’ধরনের টিকিটের ব্যবস্থা থাকবে। একটি হচ্ছে স্থায়ী কার্ড, যা রিচার্জ করে পুরো বছর বা মাসে যাতায়াত করা যাবে। প্রতিটি স্টেশনে থাকা মেশিনেও কার্ড রিচার্জ করা যাবে। প্ল্যাটফরমে প্রবেশের সময় যাত্রীদের কার্ড পাঞ্চ করতে হবে। নতুবা দরজা খুলবে না। এরপর নেমে যাওয়ার সময় আবার কার্ড পাঞ্চ করতে হবে, নতুবা যাত্রী বের হতে পারবেন না। আরেকটি কার্ড সাময়িক, যা প্রতি যাত্রায় দেয়া হবে। স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্যের ভাড়া দিয়ে এ কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। এটিও স্মার্টকার্ডের মতো।
ভাড়ার অতিরিক্ত যাতায়াত করলে ওই কার্ড দিয়ে দরজা খুলতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের কাছে বাড়তি ভাড়া পরিশোধ করেই বের হতে হবে। বলা হচ্ছে, এমআরটি লাইন-৬ বা বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেলে ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং দিনে পাঁচ লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। ছয়টি কোচ-সংবলিত প্রতিটি একমুখী মেট্রো ট্রেন প্রতিবার ৩৮ মিনিটে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সর্বোচ্চ দুই হাজার ৩০৮ যাত্রী পরিবহন করতে সক্ষম।