Print Date & Time : 25 July 2025 Friday 9:07 pm

মন্ত্রিসভায় জাতীয় কর্মসংস্থান নীতি অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক: শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য নতুন ‘জাতীয় কর্মসংস্থান নীতি, ২০২২’-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আজকের বড় একটা বিষয় (ছিল) জাতীয় কর্মসংস্থান নীতি। এটা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে। এখন সামনে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আসছে এবং আধুনিক বিশ্বের প্রযুক্তি পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে আমাদের উৎপাদন, প্রযুক্তি ও শ্রমিকদের দক্ষতার ব্যাপক পরিবর্তন করা দরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে এটা নিয়ে আসা হয়েছে। এটার মূল উদ্দেশ্য হলোÑদেশের শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এ বিষয়ে একটি আধুনিক যুগোপযোগী নীতি প্রণয়ন।

তিনি বলেন, এটা সম্ভবত বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল। তাছাড়া চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সামনে রেখে ১০টি প্রযুক্তি পরবর্তী বিশ্বে শাসন করবে। সেক্ষেত্রে দেখা গেছে, আমাদের যারা আছে, তাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দক্ষতা পরিবর্তন করতে হবে।

‘বর্তমান যে শিক্ষাব্যবস্থা বা দক্ষতা, তা দিয়ে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবকে মোকাবিলা করা যাবে না। এজন্য জাতীয় কর্মসংস্থান নীতিতে এসব বিষয় ঢোকানো হয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আমাদের ৫৬ লাখ লোককে আবার দক্ষ করে তুলতে হবে।’

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আগামী তিন-চার বছরের মধ্যে এটা করতে হবে। দ্রুত না করলে তো তারা খাপ খাওয়াতে পারবে না। তখন দেখা যাবে, ওই প্রযুক্তিও অ্যাডভান্স হয়ে যাবে। এরই মধ্যে পঞ্চম শিল্পবিপ্লবের আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। ২০৫০ সালের পরে পঞ্চম শিল্পবিপ্লব আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে থিম হবে পার্সোনালাইজেশন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, বিশেষ করে কমক্ষম কর্মসংস্থান-প্রত্যাশী মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, কর্মে নিয়োগের উপায় নির্ধারণ এবং জনশক্তিকে কর্মশক্তি উপযোগী ও দক্ষ করে তোলার মাধ্যমে বেকারত্বহীন, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমাজ প্রতিষ্ঠাই এই নীতির লক্ষ্য।

এছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার উন্নত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য রয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা লাভ এবং ২১০০ সালে নিরাপদ বদ্বীপ গঠনের যে পরিকল্পনা বা লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, সেগুলোর জন্য এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা খুবই প্রয়োজন বলে জানান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

তিনি বলেন, সেজন্য জাতীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের (ইনফরমাল সেক্টর) কর্মক্ষেত্রে শোভন-নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণ, শ্রমিকদের দক্ষতা কাজে লাগানো এবং দক্ষ শ্রমিক গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এজন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগেও প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। এর মাধ্যমে এই বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে এই নীতিটি প্রণয়ন করা হয়েছে।