Print Date & Time : 5 August 2025 Tuesday 11:37 am

ময়মনসিংহে গত তিন মাসে ৯৬ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা

রবিউল আউয়াল রবি, ময়মনসিংহ: একদিকে ভেজাল পণ্য, অন্যদিকে অতিরিক্ত দাম। সবমিলে নিত্যপণ্যের বাজারে যেন এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় ভোগান্তি নগরবাসীর জন্য। প্রতিনিয়ত অভিযান চললেও তা পর্যাপ্ত না হওয়ায় কোনো সুফল মিলছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। অতিরিক্ত মূল্য আর ভেজাল পণ্য-একে অন্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়িয়ে যাচ্ছে ভোক্তাদের দুর্ভোগ। একাধিক ভোক্তা বলেন, এখন প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। আমরা অসহায় হয়ে অতিরিক্ত দামে পণ্য কিনছি। বাজারে প্রশাসনের আরও নজর দেয়া উচিত।

তবে আশার কথা, ভোক্তার কথা মাথায় রেখে ময়মনসিংহের ১৩টি উপজেলায় গত তিন মাসে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ জেলা কার্যালয়ের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় নানা অনিয়মের কারণে নানা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা ও অর্থদণ্ড করা হয়। কিন্তু এমন অভিযানের পরও দেখা গেছে অনিয়মের নানা চিত্র।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক সচেতনতা বাড়নো না গেলে এসব অভিযানের সুফল মানুষ পাবে না। তাই শুধু অভিযান পরিচালনা করে গ্রাহকের ওপর অতিরিক্ত দামের বোঝাই বাড়ছে, কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।

গত ২৪ অক্টোবর গফরগাঁওয়ে বাজার তদারকি অভিযান পরিচালনা করে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক। এ সময় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪৪ ও ৪৫ ধারায় মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করা এবং প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করার অপরাধে মেসার্স ইকবাল ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস নামে এক প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এর আওতায় ৩৭ ধারায় পণ্যের মোড়ক, প্রভৃতি ব্যবহার না করা, ৩৮-৩৯ ধারায় পণ্য ও সেবার মূল্য তালিকা সংরক্ষণ-প্রদর্শন না করা, ৪০ ধারায় ধার্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য, ওষুধ বা সেবা বিক্রয় করাসহ মোট ২০টি ধারায় গত সেপ্টেম্বরে ৪৮টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা ও এক লাখ ৪৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে। এরপর অক্টোবরে ২৩টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করে এবং চার লাখ ৩৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে এবং চলতি নভেম্বরে ২৪ তারিখ পর্যন্ত ২৫টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করে ও এক লাখ ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ প্রসঙ্গে জেলা কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবুল কাশেম শেয়ার বিজকে বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের আরও কঠোরতা প্রয়োজন। তবে কিছুটা হলেও সাধারণ ভোক্তারা সুফল পাবেন। তবে শুধু আইন প্রয়োগ করেই এসব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এসব নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা আরও বাড়াতে হবে।

অভিযান প্রসঙ্গে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহের শেয়ার বিজকে জানান, এসব অনিয়ম পুরোদমে নির্মূল করা সম্ভব নয় তবে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। আমার ক্ষমতাবলে আমি শুধু আর্থিক দণ্ড দিতে পারি কারাদণ্ড একমাত্র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দিতে পারেন।