মানব উন্নয়ন সূচকে তিন ধাপ এগোল বাংলাদেশ

শেয়ার বিজ ডেস্ক: মাথাপিছু আয়, গড় আয়ুসহ বিভিন্ন মাপকাঠিতে উন্নতির পথ ধরে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) মানব উন্নয়ন সূচকে আরও এগিয়েছে বাংলাদেশ। গত বছরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ইউএনডিপি শুক্রবার ‘মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন-২০১৮’ প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, এক বছরে বাংলাদেশের অবস্থানের উন্নতি হয়েছে তিন ধাপ।
প্রতিবেদনে গ্লোবাল হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স (এইচডিআই) ২০১৭ অনুযায়ী, বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৩৯তম। আর এবারের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ রয়েছে ১৩৬তম অবস্থানে। এছাড়া ২০১৬ সালের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪২তম।
১৩৬তম অবস্থানে পৌঁছাতে বাংলাদেশের এইচডিআই স্কোর দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ৬০৮, গত বছর এ স্কোর ছিল শূন্য দশমিক ৫৭৯। এ সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারতের অবস্থান ১৩০তম, শ্রীলঙ্কা ৭৬তম, মালদ্বীপ ১০১তম ও ভুটান ১৩৪তম অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে থাকা দক্ষিণ এশীয় দেশ দুটি হলো নেপাল ১৪৯তম ও পাকিস্তান ১৫০তম।
উল্লেখ্য, প্রতিটি দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আয় ও সম্পদের উৎস, বৈষম্য, লৈঙ্গিক সমতা, দারিদ্র্য, কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও আর্থিকপ্রবাহ, যোগাযোগ, পরিবেশের ভারসাম্য ও জনমিতির তথ্য বিশ্লেষণ করে এ মানব উন্নয়ন সূচক তৈরি করে ইউএনডিপি।
গতবারের মতো এবারও এইচডিআই সূচকে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে নরওয়ে। তালিকায় প্রথম স্থানে থাকা ইউরোপের এ দেশটির এইচডিআই স্কোর শূন্য দশমিক ৯৪৯ থেকে বেড়ে শূন্য দশমিক ৯৫৩ হয়েছে।
এ সূচকে আসা ১৮৯টি দেশকে অতি উন্নত, উন্নত, মধ্যম ও নি¤œ মানব উন্নয়নের চারটি স্তরে ভাগ করা হয়েছে। বাংলাদেশ রয়েছে মানব উন্নয়নের দেশের স্তরে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মালদ্বীপ গতবারের ?তুলনায় চার ধাপ, বাংলাদেশ তিন ধাপ এবং ভারত এক ধাপ এগিয়েছে। আর বাকি চার দেশের অবস্থানের অবনতি হয়েছে। এসডিজির লক্ষ্য হলো ২০৩০ সালের মধ্যে কেউ যাতে পিছিয়ে না থাকে। এটাকে ভিত্তি ধরেই মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। যেসব দেশের নাগরিকদের প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল বেশি, শিক্ষাব্যবস্থা উন্নত এবং মাথাপিছু আয় বেশি, সেসব দেশই তালিকায় সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল ৭২ বছর থেকে বেড়ে ৭২ দশমিক আট বছর হয়েছে; শিশুদের স্কুলে কাটানোর প্রত্যাশিত সময় গড়ে ১০ দশমিক দুই বছর থেকে বেড়ে ১১ দশমিক চার বছর হয়েছে এবং মাথাপিছু আয় (জিএনআই) বছরে তিন হাজার ৩৪১ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে তিন হাজার ৬৭৭ ডলার। আর সূচকের শীর্ষ অবস্থানে থাকা নরওয়ের নাগরিকদের প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল ৮২ দশমিক তিন বছর, শিশুদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাটানোর প্রত্যাশিত সময় গড়ে ১৭ দশমিক ৯ বছর এবং মাথাপিছু আয় (জিএনআই) বছরে ৬৮ হাজার ১২ ডলার। এবারের সূচকের শীর্ষ দশে থাকা ১২ দেশ হলো নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড, জার্মানি, আইসল্যান্ড, হংকং, সুইডেন, সিঙ্গাপুর ও নেদারল্যান্ডস। এর মধ্যে শুধু সিঙ্গাপুর ও হংকংই এশিয়ার দেশ। আর সবচেয়ে বাজে অবস্থানে থাকা ১০ দেশ হলো নাইজার, মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ সুদান, চাদ, বুরুন্ডি, সিয়েরা লিওন, বুরকিনা ফাসো, মালি, লাইবেরিয়া ও মোজাম্বিক।
ইউএনডিপির প্রশাসক অচিম স্টেইনার বলেছেন, সংস্থার উন্নয়ন চিন্তার মূলে থাকে হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো বৈশ্বিক মানব উন্নয়নের পরিস্থিতি তুলে ধরে বিশ্বজুড়ে উন্নয়ননীতি জানিয়ে দেওয়া।