‘মান-মর্যাদা’র ব্যতিক্রমী ইশতেহার ভিপি প্রার্থী আলীমের ‘নেতৃত্বের ধরন পাল্টে যাবে’

আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবদুল আলীম তার ইশতেহারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর মর্যাদাভিত্তিক সম্পর্ক নিশ্চিত করতে প্রচলিত ‘টপ টু বোটম’ নেতৃত্ব বাতিল করে ‘রাউন্ড টেবিল লিডারশিপ’ চালু করার প্রতিশ্রুতি কথা ব্যক্ত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা ওই ইশতেহারে তিনি বলেছেন, এটি বাস্তবায়িত হলে নেতাকর্মী সম্পর্কের ধরন বদলে যাবে। কর্মী নন তারা হবেন সহকর্মী, নেতা নন তারা
হবেন মুখপাত্র: এটাই হবে সম্প্রীতির সম্পর্ক।

গতানুগতিক স্টাইলে নেতাকর্মীর মধ্যকার আদেশ জারি ও হুকুম পালনের বাধ্যবাধতা থাকবে না, সবার মর্যাদা নিশ্চিত হবে। সম্পর্ক হবে সহযোগিতামূলক। এ ক্যাম্পাস শোষণ বা অবদমনের নয়, বরং ব্যক্তিত্ব গঠনের সূতিকাগার হিসেবে আবারও প্রাণ ফিরে পাবে। পাঁচ বছর স্বতঃস্ফূর্ত পরিবেশে নিজেদের ব্যক্তিত্ব বিকশিত করতে পারলে প্রতিটি শিক্ষার্থী শুধু একটি সার্টিফিকেট নয়, বরং সমাজকে আলোকিত করতে একেকটি আলোকবর্তিকা হয়ে বের হবে। ইশতেহারে ডাকসুর এ প্রার্থী আরও বলেন, যে কোনো বড় ইস্যুতে বিষয়ভিত্তিক ওপেন-এন্ডেড ডিসকাশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মতামত গ্রহণ ও জরিপের ব্যবস্থা থাকবে। সংখ্যাগরিষ্ঠের মত নিয়ে তা বাস্তবায়নের জন্য সিনেট-সিন্ডিকেটের বৈঠকে বসা হবে। প্রতি মাসে গণ-আলাপনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে প্রতিনিধির জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে।
এছাড়া রাত ১২টার পর আবাসিক হলের করিডোরে কোনো সেøাগান বা কর্মসূচি না রাখা, শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলা বা মানসিক নির্যাতন বা হুমকি-ধমকির জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা, ছাত্রীদের অবরোধবাসিনী করে না রেখে
ছেলেদের আবাসিক হলের মতো মেয়েদের হল তাদের প্রয়োজনীয় চলাফেরার জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে এমন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এ তরুণ।

ক্যাম্পাসের নিরাপত্তায় প্রশাসনের পাশাপাশি ডাকসুর বিশেষ টহল দল, অভিযোগ বক্স, বা অনলাইন কমপ্লেইন ইনবক্স, ক্যাম্পাস থেকে ভয়ের সংস্কৃতি তাড়িয়ে দেওয়া, গেস্টরুম নামক অপসংস্কৃতিচিরতরে বন্ধ করে দেওয়া, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের পরিধি বৃদ্ধির মাধ্যমে নতুন শিক্ষার্থীদের পরিচিত করে তোলাসহ হল জীবনের নানা অসঙ্গতি দূর করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে এ ভিপি প্রার্থীর। যা অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের ইশতেহারেও এত ব্যাপকভাবে
বলা হয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল অধ্যয়নরত মো. আবদুল আলীম শেয়ার বিজকে বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির
পর কোনো গরিব শিক্ষার্থীকে যেন লেখাপড়া চালিয়ে যেতে যেখানে-সেখানে হাত পাততে না হয়, তা নিশ্চিত করতে ডাকসুর তহবিল থেকে বৃত্তি চালু করা হবে। কেননা ডাকসুর পর্যাপ্ত তহবিল রয়েছে। এমফিল-পিএইচডি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের গবেষণা বৃত্তি বাড়ানো হবে। কেন্দ্রীয় ও হলের লাইব্রেরিগুলো ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে, থাকবে সিসি-ক্যামেরা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা। শিক্ষার্থীদের মানসিক পরিস্থিতি উন্নত রাখতে করা হবে আধুনিক কাউন্সেলিং সেন্টার।
ডাকসুর উদ্যোগে প্রতিটি শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে (একজনের জন্য একটি করে) বছরে একবার বৃক্ষরোপণ করা হবে। প্রতি বছর কমপক্ষে ৪০ হাজার বৃক্ষরোপণের এ উদ্যোগ ক্যাম্পাসকে সবুজ করার পরে পুরো ঢাকা এমনকি পুরো দেশকে সবুজ করে তুলবে।

মো. আবদুল আলীম শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক নানা সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়ালেখার সূত্র ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে রিপোর্টিং করেছেন। লেখালেখি করেন আলীম হায়দার নামে, একাধিক কাব্যগ্রন্থ ও কিশোর ক্লাসিক প্রকাশিত হয়েছে এ প্রার্থীর।