শেয়ার বিজ ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বিশ্বমানের তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি বাড়াতে চায় বাংলাদেশ। বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক বাংলাদেশ। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মান, মূল্য এবং ডিজাইন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হচ্ছে; এ কারণে রপ্তানি বাড়ছে। বাংলাদেশের বর্তমান রপ্তানি আয়ের ৮৩ দশমিক ৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার রপ্তানি বাড়াতে এবং মেড ইন বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার চলমান কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাক খাতকে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছে এবং এ খাতকে স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী স্থানীয় সময় গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে ক্যালিফোর্নিয়ার লাস ভেগাস কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত ‘মেনস অ্যাপারাল গিল্ড ইন ক্যালিফোর্নিয়া’ শীর্ষক বাণিজ্যমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে প্রায় ৪৫ লাখ শ্রমিক কাজ করছেন, এর বেশিরভাগই নারী। নারী কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত বিশেষ অবদান রাখছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে, আমরা এ সুযোগ কাজে লাগাতে চাই। এ জন্য উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য উন্নত মান, নতুন ডিজাইন, গ্রাহকের পছন্দ ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের চাহিদা মোতাবেক সব ধরনের উপাত্ত ও প্রয়োজনীয় তথ্য প্রণয়ন করা হবে। ২০১২ সালে অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে এবং টেকসই উন্নয়ন ঘটেছে। বিশ্বের তৈরি পোশাক খাতের বেশিরভাগ ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি’এখন বাংলাদেশে। নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকরা কাজ করছে। আমি আহ্বান জানাচ্ছি, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ সফর করে তৈরি পোশাক খাতের কারখানা ও শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ দেখুন। বাংলাদেশ এখন বিশ্বমান বজায় রেখে নিরাপদ পরিবেশে তৈরি পোশাক কারখানাগুলো পরিচালনা করছে।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের কাজের মান, উৎপাদন খরচ, শ্রমিকদের কমপ্লায়েন্স, কাজের পরিবেশ ও স্বাস্থ্যসেবা এবং টেকসই উন্নয়নে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তারা বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বিষয়ে উপাত্ত, প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত, তৈরি পোশাকশিল্পের ইতিহাস আরও জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বাজারজাতকরণের বিষয়ে তারা সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এ সময় উপস্থিত ছিলেনÑযুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে বাংলাদেশ কনসাল জেনারেল অফিসের কনসাল জেনারেল ও কমার্শিয়াল কাউন্সিলর, সফররত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. হাফিজুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক সোহেলী সাবরীন, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট খন্দকার রফিকুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী বব বার্গ, ইনফরমার কমার্শিয়াল প্রেসিডেন্ট কেলি হেল্পম্যান, মেলার ইভেন্ট ডিরেক্টর আনড্রেও ডেভিড এবং ব্যবসায়ী ড. সিনদে জে.লিন।