ক্রীড়া ডেস্ক: বহুজাতিক টুর্নামেন্টে একাধিকবার শিরোপা ছোঁয়ার খুব কাছে গিয়েও হতাশ হওয়ার অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশের। তেমনি পরিস্থিতির মুখেই গত পরশুও প্রায় পড়তে যাচ্ছিল টিম টাইগার্স। কিন্তু এবার আর তেমনটি হতে দেননি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। দলের প্রয়োজনে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন তিনি। অপরাজিত ২৪ বলে ৫২ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে লাল-সবুজদের প্রথম শিরোপার স্বাদ পাওয়ান। ম্যাচ শেষে এ ডানহাতির কাছে এমন খেলার রহস্য জানতে চাওয়া হলে, তিনি বলেন মাশরাফি বিন মুর্তজায় এমনটা খেলতে আগেই ডেসিং রুমে অনুপ্রেরণা জুড়িয়েছিলেন।
গত পরশু মুশফিকুর রহিমের পর যখন মোহাম্মদ মিথুনও আউট হলেন, ড্রেসিং রুমে অনেকের মাথা নুয়ে এসেছিল হতাশায়। মাশরাফি বিন মুর্তজা উঠে নতুন ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেনের কাছে গিয়ে পিঠ চাপড়ে দেন। কানে দুটি মন্ত্রও পড়ে দেন। যা নাকি এ ডানহাতির কাজে লেগেছে ২২ গজে গিয়ে।
মুশফিকের বিদায়ের পর মোসাদ্দেক যখন উইকেটে যান, তখন জয় থেকে টাইগাররা দূরে ৬৭ রান। হাতে রয়েছে ৫০। বর্তমান ক্রিকেটের দিকে তাকালে ব্যাপারটি খুব কঠিন কিছু নয়। কিন্তু যদি আরেকটি উইকেট পড়ে যায়? এ প্রশ্নটাই ছিল সবার মধ্যে। যা হোক সেসব আর ভাবতেই দেননি মোসাদ্দেক। এক প্রান্ত আগলে রেখে ঝড় তুলে মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে ঠিকমতোই জয় ছিনিয়ে আনেন এ ডানহাতি।
ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমে অধিনায়কের কাছ থেকে পাওয়া প্রেরণার কথা জানিয়েছেন মোসাদ্দেক, ‘উইকেটে যাওয়ার আগে মাশরাফি ভাই বলছিলেন, ‘সৈকত তুই পারবি। যা ইচ্ছা খেল, শেষ করে আয়।’ শুধু ওই সময়ই নয়, আগের ম্যাচে বোলিংয়ের সময়, এমনকি এবার ঢাকা লিগের পুরো সময়, মাশরাফি ভাই আমাকে নানাভাবে উৎসাহ দিয়ে গেছেন। দলের বাইরে ছিলাম তখন। উনি বলেছেন যে, কি কি করলে দলে ফিরতে পারি। অধিনায়ক এমন ভরসা করলে আত্মবিশ্বাস সবসময়ই ভালো থাকে।’
অধিনায়কের কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে মোসাদ্দেক চেষ্টা করেছিলেন ২২ গজে শুধু ইতিবাচক খেলব। শেষ পর্যন্ত সফল হতে সে কৌশলই কাজে লেগেছে তার, ‘ব্যাটিংয়ে যাওয়ার পর আমার একটি ব্যাপারই কাজ করছিল যে ইতিবাচক ক্রিকেট খেলব। এমন একটা পরিস্থিতি ছিল যে খুব সহজ ছিল না। আমি চেষ্টা করেছি বল বুঝে খেলতে। আর কিছু না।’
ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে যখন জয়ের জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ২৪ ওভারে ২১০ রান, ঠিক তখন থেকেই সিনিয়ররা সবাই ড্রেসিং রুমে জুগিয়েছেন সাহস। ম্যাচ শেষে মোসাদ্দেক জানিয়েছেন ব্যাপারটি, ‘আমরা যখন ফিল্ডিং করে ফিরেছি, তখন মাশরাফি ভাই থেকে শুরু করে মুশফিক ভাই, তামিম ভাই, রিয়াদ ভাই, সবাই একটা কথা বলছিলেন যে, আমাদের যে ব্যাটিং সামর্থ্য আছে এবং পুরো টুর্নামেন্টে যেমন খেলেছি, আমাদের পক্ষে এ রান তাড়া করা সম্ভব।’
