মিয়ানমারে গণতন্ত্রপন্থি চার আন্দোলনকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

শেয়ার বিজ ডেস্ক: সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহায়তা করার দায়ে অভিযুক্ত চার গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে মিয়ানমারের সামরিক কর্তৃপক্ষ। কয়েক দশকের মধ্যে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা এটি। ১৯৮৮ সালের পর এই প্রথম মিয়ানমারে কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলো। খবর: রয়টার্স।

গত বছর এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে বিরোধীদের ওপর নিষ্ঠুর দমনপীড়ন চালানো সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিলিশিয়াদের লড়াইয়ে সহায়তা করার দায়ে ওই চারজনকে অভিযুক্ত করা হয়। চলতি বছর জানুয়ারিতে রুদ্ধদ্বার বিচারে তাদের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়া হয়।

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সাবেক আইনপ্রণেতা ফিয়ো জেয়া থ-কে জানুয়ারিতে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। গত বছর নভেম্বরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সরকারি বাহিনীর ওপর বেশ কয়েকটি হামলার পরিকল্পনা করার অভিযোগ আনা হয়েছিল ফিয়ো জেয়া থ-এর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে গত বছর আগস্টে ইয়াঙ্গুনে একটি কমিউটার ট্রেনে বন্দুক হামলার ঘটনাও রয়েছে। ওই হামলায় পাঁচ পুলিশ সদস্য নিহত হন। গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকর্মী কিয়াও মিন ইউকেও সামরিক ট্রাইব্যুনালে একই সাজা দেয়া হয়। অন্য দুই ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ইয়াঙ্গুনে এক নারীকে হত্যার দায়ে। তাদের অভিযোগ, ওই নারী জান্তার জন্য তথ্যদাতা হিসেবে কাজ করতেন।

ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত মিয়ানমারের ছায়া প্রশাসন ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) এ মৃত্যুদণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে। সামরিক জান্তা সরকারের এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। জান্তা সরকারকে এই নৃশংস কর্মকাণ্ডকে ক্ষমা না করার জন্য বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) এশিয়া-বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এলাইনে পিয়ারসন। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জান্তার এ সিদ্ধান্তের জন্য নিন্দা জানিয়েছেন। এ সিদ্ধান্তকে মানুষের জীবনযাপন, স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার অধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন তিনি। জান্তার সামরিক আইন অনুযায়ী, ২৩টি ‘অনির্দিষ্ট ও ব্যাপকভাবে সংজ্ঞায়িত অপরাধের ঘটনায়’ মৃত্যুদণ্ড দেয়া হতে পারে। অর্থাৎ সেনাবাহিনীর যেকোনো ধরনের সমালোচনাকেও এর অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষজ্ঞ রিচার্ড হোরসি এক টুইটার পোস্টে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার এ ঘটনাকে জঘন্য কর্মকাণ্ড বলে উল্লেখ করেন।