প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জে বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে তিন দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। সেই মারামারিতে অন্তত ২০জন আহত হয়েছেন দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আতাউল করিম জানিয়েছেন ২০ জনের মধ্যে ১০ জনেরও উপরে গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুইজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টার দিকে শহরের সুপার মার্কেট চত্বর ও পিটিআই চৌরাস্তা এলাকায় এই মারামারি ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে নাদিম (১৭), মেহেদী হাসান (২৬), অপু খান (১৯), আরিফজুজ্জামান (৩৭), উজ্জ্বল (৪৫), মাসুদ (২০), মনির হোসেন (৫৮), জসিম উদ্দিন (৫২) বাকীদের নাম পাওয়া যায়নি। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ আতাউল করিম।
শহরের উত্তর ইসলামপুরের পিটিআই স্কুলের গলির সামনেও একটি মারামারির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, জেলা বিএনপির সমাবেশে যোগদান কালে মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির মিছিলে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালায় । এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে মেহেদী হাসান ও অপু খান নামের দুইজনকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, সদর উপজেলার চরাঞ্চলের মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন থেকে বিএনপি নেতা আওলাদ হোসেন মোল্লার নেতৃত্বে, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওহিদ মোল্লা,সাধারণ সম্পাদক জাকির সরকার, বিএনপি নেতা আতিক মল্লিক সহ একটি মিছিল জেলা বিএনপির সমাবেশ যোগদানের লক্ষে শহরের সুপার মার্কেট চত্বর এলাকায় পৌছলে তাদের প্রতিপক্ষ রহিম মোল্লার কর্মী সর্মথকরা মিছিলের সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে৷ এসময় তাদের সরাতে গেলে মিছিলের উপর চালিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছে। অপর দিকে শহরের দক্ষিণ ইসলামপুরের যোগীনিঘাট এলাকার সাথে মোল্লার চর এলাকার লোকজনের মধ্যে দুই দফা মারামারি হয়। এতেও কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে।
মারামারি বিষয়টি দুঃখজনক দাবি করে বিএনপি নেতা আওলাদ হোসেন মোল্লা বলেন, আমাদের মিছিলের সামনে রহিম মোল্লার লোকজন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তাদের সরাতে গেলে আমাদের উপর হামলা চালায় তারা। এসময় তাদের এলোপাতাড়ি মারধরে আমাদের অনেকজনকে আহত হয়েছে । যা খুবই দুঃখজনক।
তবে নিজেরা হামলার শিকার হয়েছে বলে দাবি করে রহিম মোল্লা বলেন, আওলাদ হোসেন মোল্লার মিছিল থেকে আমার কর্মীসর্মথকদের উপর হামলা চালানো হয়। এতে আমাদের ৫ জন আহত হয়েছে। আমরা এরা সঠিক বিচার দাবি করছি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম জানান, সামাবেশে আসার পথে বিভিন্ন জায়গায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। ইসলামপুর দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির খবর পেয়েছি। অপরদিকে মোল্লাকান্দির দুই গ্রুপে মারামারি হয়েছে। তবে থানায় কোন গ্রুপই লিখিত বা মৌখিক কোন অভিযোগ করেনি। কতজন আহত হয়েছে তাও জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, সোমবার মুন্সীগঞ্জ শহরের পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি ও জাতীয় নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবি আদায়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।