মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই দর বাড়ছে হাক্কানী পাল্প অ্যান্ড পেপারের

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারদর বাড়ার পেছনে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই কাগজ ও মুদ্রণশিল্প খাতের কোম্পানি হাক্কানী পাল্প অ্যান্ড পেপার মিলস লিমিটেডের। সম্প্রতি অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চাইলে কোম্পানিটি এমন তথ্য জানায়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সম্প্রতি কোম্পানিটির অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে ডিএসই নোটিস পাঠায়। জবাবে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ারদর বাড়ছে বলে জানায় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। বাজার বিশ্লেসণে দেখা গেছে, ডিএসইতে গত ৩ মার্চ কোম্পানির শেয়ারদর ছিল ৬০ টাকা ১০ পয়সা, যা গত ৯ মার্চ লেনদেন হয় ৬৪ টাকা ৬০ পয়সায়। এ হিসাবে মাত্র ৪ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়েছে ৪ টাকা ৫০ পয়সা। আর এই দর বাড়াকে অস্বাভাবিক মনে করছে ডিএসই।

এদিকে গতকাল ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ বা ৩ টাকা বেড়ে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ৬৭ টাকা ৬০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ৬৭ টাকা ৬০ পয়সা। দিনজুড়ে ১২ লাখ ৭১ হাজার ৮০৪টি শেয়ার ২ হাজার ৬৪০ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনিম্ন ৬৪ টাকা ৮০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৬৯ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারদর ৩৫ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৭১ টাকা ৯০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।

কোম্পানিটি ২০০১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। কোম্পানির ৫০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১৯ কোটি টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ২৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট এক কোটি ৯০ লাখ শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ৪৭ দশমিক ২৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে শূন্য দশমিক ০৯ শতাংশ ও বাকি ৪৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে।
চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২৪) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২৩ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৩২ পয়সা। অর্থাৎ দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ৯ পয়সা কমেছে। অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে বা প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২৪) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ২৫ পয়সা, আগের হিসাববছরের একই সময়ে যা ছিল ৩৪ পয়সা। সে হিসেবে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ৯ পয়সা কমেছে। ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ৪২ পয়সা। আর প্রথমার্ধে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ৫ টাকা ৪৫ পয়সা, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৪ টাকা ৯২ পয়সা।

কোম্পানিটি ৩০ জুন ২০২৪ সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪ পয়সা এবং ২০২৪ সালের ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ২৯ পয়সা। আর আলোচিত হিসাববছরে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ৭ টাকা ১৫ পয়সা। এর আগে কোম্পানিটি ৩০ জুন ২০২৩ সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৮৯ পয়সা এবং ২০২৩ সালের ৩০ জুনে শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ৪৫ পয়সা। আর আলোচিত হিসাববছরে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ৪ টাকা ৬৩ পয়সা। এর আগে ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে এক শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে এক টাকা ৩০ পয়সা (লোকসান) এবং শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৯৪ পয়সা। এর আগে ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরেও এক শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে এক টাকা ২৮ পয়সা (লোকসান) এবং শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ৯৬ পয়সা।