Print Date & Time : 13 September 2025 Saturday 5:04 am

মেয়র জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক জানান।

তিনি বলেন, ‘মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তার প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল করা হয়েছে।’

এই খবরে গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগ যুবলীগ আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা টঙ্গী, গাজীপুর চৌরাস্তা, কোনাবাড়ী, কাশিমপুর পূবাইলসহ বিভিন্ন জায়গায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেন।

উল্লেখ্য, গত ২২ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। চার মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ ছাড়াও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এবং রাষ্ট্রীয় দুটি সংস্থা নিয়েও নানা আপত্তিকর মন্তব্য করেন মেয়র জাহাঙ্গীর।

তিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন এবং বঙ্গবন্ধুর দেশ স্বাধীন করার উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

তীব্র সমালোচনায় পরে আরেকটি ভিডিও বার্তায় মেয়র দাবি করেন, ফেসবুকের ভিডিওটি সুপার এডিট করে প্রচার করে তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করা হচ্ছে। এদিকে ফেসবুকে তার এ বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ করেন গাজীপুর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সেøাগান দেন তারা। একই দিন টঙ্গী স্টেশন এলাকায় রেললাইনে আগুন দেন বিক্ষুব্ধরা। বিষয়টি নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে পড়ে গাজীপুরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি।

এ ঘটনায় গত ৩ অক্টোবর মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে শোকজ করে আওয়ামী লীগ। ১৫ দিনের মধ্যে তাকে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়। মেয়র জাহাঙ্গীর আলম নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব দিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।