Print Date & Time : 6 July 2025 Sunday 12:38 am

মেহেরপুরের সড়কে মৃত্যুর মিছিল

প্রতিনিধি, মেহেরপুর : মেহেরপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনা এখন নিয়মিত ব্যাপার হয়ে উঠেছে। যানবাহনের অতিরিক্ত গতি, অনিয়ন্ত্রিত ট্রাফিক ব্যাবস্থা, অবৈধ যানবাহনের বেপরোয়া গতি এসব কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা, হচ্ছে প্রাণহানি। জরিপে দেখা গেছে মেহেরপুর জেলায় গত ৬ মাসে প্রায় অর্ধশত মানুষ সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ হয়েছে। এসব দূর্ঘটনার জন্য দায়ি বেশিরভাগই মোটরসাইকেল ও অবৈধ যানবাহনের বেপরোয়া গতি। মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই তরুণ।

গত ৪৮ ঘন্টায় অবৈধ লাটাহাম্বার ও মোটরসাইকেলের পৃথক দূর্ঘটনায় মোমিনুল ইসলাম নামের এক জামায়াত নেতা ও গাংনীর সানিক নামের এক কলেজ ছাত্র নিহত হয়েছে। গত ৮ জানুয়ারি ট্রাকের চাকায় পৃষ্ঠ হয়ে সিয়াম হোসেন, আল বাকি ও শিপন আলী নামের তিন বন্ধু প্রাণ হারায়। চলতি মাসেই সড়কে ঝরেছে ৬ প্রান, তারমধ্যে ৪ জনই কলেজ ছাত্র।

সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা অনেক বাবা-মা। সড়ক দূর্ঘটনা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও অনেক কঠোর হওয়ার আহবান তাদের। মুজিবনগরে মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে কাতর আসাদুল ইসলাম। তিনি জানান, আর যেন কোন বাবা-মায়ের কোল খালি না হয়, সেজন্য সড়কে আরও কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করতে হবে। অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বেপরোয়া গতি রোধের জন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রয়োগ করতে হবে।

এছাড়াও গত কয়েক মাসে দূর্ঘটনার শিকার হয়ে সারাজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করেছে শতাধিক মানুষ। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে অনেকে। সম্প্রতি সদর উপজেলার রাধাকান্তপুর গ্রামের রিয়াদ হাসান নামের এক ফুটবলার করিমনের ধাক্কায় পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। এখনো সে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে।

রিয়াদের পরিবারের লোকজন জানান, ফুটবল খেলে বাড়ি ফেরার সময় করিমনের ধাক্কায় তার ডান পা কয়েক টুকরো হয়েছে। বেঁচে থেকেও যেন সে মৃত। তার সপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। সে আর কোন দিন ফুটবল খলতে পারবে না। এমনকি সোজা হয়ে দাড়াতেই পারবে না। এ বিচার কার কাছে দেবো।

সড়ক দূর্ঘটনা রোধে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগের বিকল্প দেখেন না জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি তোজাম্মেল আযম। তিনি বলেন, ছোট এই জেলাতে গত ছ মাসে অর্ধশত প্রাণহানি ঘটেছে। এটা শুধু ভাগ্যকে দোষারোপ করলে হবে না। দূর্ঘটনা রোধে নিয়ন্ত্রিত ট্রাফিক ব্যবস্থা থাকতে হবে। যথাযথ আইন প্রয়োগ করতে হবে।

জেলা ট্রাফিক বিভাগের প্রধান ইন্সপেক্টর ইসমাইল হোসেন জানান, আমরা অবৈধ যানবাহনের ব্যাপারে কঠোর। প্রতিদিন প্রায় ৫-৬ টা মামলা হচ্ছে শুধু অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে। নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। মোবাইল কোর্ট করা হচ্ছে। সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করছি।