নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে এ দেশে কে ক্ষমতায় থাকবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ভারত সফরে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা করিনি। দুদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।’
গতকাল দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মানুষ হিসেবে আমার যেমন একটি ভোট আছে, তেমনি এ দেশের সংখ্যালঘু মানুষেরও একটি ভোট দেওয়ার সমান অধিকার রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আজ সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তাদের যোগ্যতা বলে সচিব, এসপি, ডিসি ও বড় বড় কর্মকর্তা হচ্ছেন। এটা একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে বলেই সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আছে বলেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তাদের মর্যাদা ও অধিকার সমানভাবে ভোগ করতে পারছে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি খুলনা সিটি নির্বাচনে ভোট কম পেয়ে পরাজিত হয়ে আগামী নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার জন্য নানা পথ খুঁজছে। শুধু খুলনায় নয়, বার কাউন্সিল নির্বাচনেও বিএনপি পরাজিত হয়েছে। তাই তারা আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে ভয় পাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আদালত খালেদা জিয়ার জামিন দিয়েছেন। এতেই প্রমাণিত হয়, বাংলাদেশে আইনের শাসন বিদ্যমান। এ ব্যাপারে সরকারের কোনো হাত নেই। খালেদা জিয়া যেসব মামলায় আটক, সেসব মামলা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দায়ের করা নয়। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের মামলায় তিনি ১৫২ দিন আদালতে হাজির হননি।’ তাই আদালতের মামলার রায় দিতে দেরি হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, বিদেশে গিয়ে নালিশ করে কোনো লাভ নেই। বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে এ দেশে কে ক্ষমতায় থাকবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ভারত সফরে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা করিনি। দুদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।’ সীমান্ত চুক্তির সফলতার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করছি, শিগগিরই তিস্তা পানি চুক্তি হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের যে হৃদ্যতাপূর্ণ আলোচনা হয়েছে, তা অভূতপূর্ব। দুদেশের দুটি দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে উভয় দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার নিয়ে অনেক কথা হয়। এ দেশে তাদের সমান অধিকার রয়েছে। মানুষ হিসেবে আমার যেমন একটা ভোট আছে, তেমনি সংখ্যালঘু মানুষেরও একটা ভোট দেওয়ার অধিকার আছে।’
ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে। বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭১ সালে দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের যে ভিত রচনা করে গিয়েছিলেন, তা বর্তমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমলে আরও উচ্চতায় নিয়ে গেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এর আগে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বেলুন উড়িয়ে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বিপুলসংখ্যক নেতা যোগ দেন। সম্মেলনে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন বাধ্যতামূলক করা, ঢাকেশ্বরী মন্দিরের জমি উদ্ধার, অর্পিত সম্পত্তি আইন বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবি জানান। তাপস কুমার পালের সঞ্চালনায় এ সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন সিকদার। সম্মেলনে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা রানা দাস গুপ্ত।
