মোবাইল কলরেট কম, তাই শুল্ক বাড়ানো হয়েছে: এনবিআর চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছেন, বর্তমানে কলরেট অনেক কম, তাই অপ্রয়োজনীয় কথা বলার প্রবণতা বেড়ে গেছে। তবে কথা বলার প্রবণতা কমানোর জন্য কলরেটে আরও পাঁচ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়নি। বরং কলরেট কম তাই মাত্র পাঁচ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে, যা ব্যয়ের সক্ষমতা মানুষের আছে। গতকাল নতুন অর্থবছরের (২০২০-২১) প্রস্তাবিত বাজেট-উত্তর এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে মোবাইলে খরচ বাড়ানো হলো কেন, এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে প্রশ্ন করা হলে তিনি জবাব না দিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যানকে উত্তর দিতে বলেন। উত্তরে এনবিআরের চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের একটা সমস্যা হচ্ছে কত শতাংশ বাড়ানো হলো সেটা বিবেচনা না করেই এর বিরোধিতা করা হয়। এক্ষেত্রে মাত্র পাঁচ শতাংশ শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এটাতে মানুষের তেমন ক্ষতি হবে না। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মোবাইল কলরেটের হার এত কম যে অপ্রয়োজনীয় কথা বলার পরিমাণ বেড়ে গেছে। এতে করে কথা বলতে বলতে ট্রেনের সঙ্গে অ্যাকসিডেন্ট করার ঘটনাও আছে। তবে আমরা কথা বেশি বলাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এ শুল্ক বাড়াইনি। বরং কলরেট খুব কম। তাই এক্ষেত্রে মাত্র পাঁচ শতাংশ শুল্ক বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য বাজেটে মোবাইল সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে সেবার বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন কর হারে মোবাইল সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) ১৫ শতাংশ, সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশ ও সারচার্জ এক শতাংশ হলো। ফলে মোট করভার দাঁড়াবে ৩৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

অর্থাৎ প্রতি ১০০ টাকা রিচার্জে সরকারের কাছে কর হিসাবে যাবে ২৫ টাকার কিছু বেশি। এতদিন তা ২২ টাকার মতো ছিল। ফলে মোবাইল ফোনে কথা বলা, এসএমএস পাঠানো এবং ডেটা ব্যবহারের খরচও বেড়ে যাবে। গত অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে সেবার বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক পাঁচ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছিল। ঘোষিত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, করোনার কারণে এ লক্ষ্যমাত্রা চ্যালেঞ্জ হবে। করোনা না হলে আমরা অনায়াসে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারতাম। সে সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। এরপরও আমরা চেষ্টা করব। তিনি বলেন, সব সময় করনেট না বাড়িয়ে করহার বাড়ানো হয়েছিল। ফলে বিদ্যমান করদাতারা ফাঁকিতে উৎসাহিত হয়েছে, ফাঁকি বেড়েছে। করদাতারা নেটের বাইরে চলে গেছে। যত করজাল সম্প্রসারণ করা যাবে তত করদাতা বাড়বে, বিদ্যমান করদাতাদের ওপর চাপ কমবে এবং রাজস্ব বাড়বে। করজাল সম্প্রসারণের দিকে নজর ও অটোমেশনের ওপর জোর দেওয়া হবে।