নিজস্ব প্রতিবেদক: বাসা থেকে মদ উদ্ধারের মামলায় ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অন্যতম পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে দুদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গতকাল পুলিশের রিমান্ড আবেদনের শুনানি করে ঢাকার মহানগর হাকিম সারাফুজ্জামান আনসারী এ আদেশ দেন।
লোকমানের পক্ষে রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিনের আবেদন করেছিলেন ঢাকা বারের
সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিএনপিপন্থি আইনজীবী মকবুল হোসেন ফকির।
শুনানিতে তিনি বলেন, ‘রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, মদের বোতল পাওয়া গেছে লোকমানের বাসায়। অথচ মোহামেডান ক্লাবে অবৈধভাবে মদের ব্যবসা করার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। ভুয়া যুক্তি দিয়ে তাকে রিমান্ডে নিতে চাইছে।’
শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নাকচ করে দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ লোকমান বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেরও (বিসিবি) পরিচালক। গত রোববার মতিঝিলের ঐতিহ্যবাহী এ ক্লাবে অভিযান চালিয়ে দুটো রুলেট টেবিল, ৯টি বোর্ড, বিপুল পরিমাণ কার্ড, ১১টি ওয়্যারলেস সেট ও ১০টি বিভিন্ন ধরনের চাকু পাওয়ার কথা জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
এবার বুধবার মধ্যরাতে তেজগাঁওয়ের মনিপুরীপাড়ার বাসা থেকে লোকমানকে আটক করে র্যাব-২ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সকালে র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাসায় ‘অনুমোদনবিহীন পাঁচ বোতল বিদেশি মদ’ পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা লোকমান এক সময় দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে ২০০৮ সালে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা লোকমান এক সময় দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে ২০০৮ সালে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগেই লোকমান গত দুবছরে বিপুল অঙ্কের টাকার মালিক হয়েছেন বলে তথ্য এসেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে।
র্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, মোহামেডান ক্লাবে লোকমানের ছিল ‘একচ্ছত্র আধিপত্য’। তিনিই ক্লাবের ঘরগুলো দেড় বছর আগে ক্যাসিনোর জন্য ভাড়া দিয়েছিলেন। আর মোহামেডান ক্লাবের ওই ক্যাসিনোটি চালাতেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কাউন্সিলর একেএম মোমিনুল হক ওরফে সাঈদ কমিশনার, যিনি ইতোমধ্যে দেশের বাইরে চলে গেছেন।
লোকমানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাব-২ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বৃহস্পতিবার বলেন, লোকমান প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে পাচ্ছিলেন ক্যাসিনোর আয় থেকে। অস্ট্রেলিয়ার এএনজেড ও কমনওয়েলথ ব্যাংক ছাড়াও দেশের কয়েকটি ব্যাংকে তার গচ্ছিত টাকার পরিমাণ প্রায় ৪১ কোটি টাকা। তবে লোকমানকে বৃহস্পতিবার দুপুরে তেজগাঁও থানায় হস্তান্তর করে তার বিরুদ্ধে শুধু মাদক আইনেই মামলা করে র্যাব।
র্যাব কর্মকর্তা আশিক তখন বলেছিলেন, ‘তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারলে ক্লাবভিত্তিক ক্যাসিনো ঘিরে আরও তথ্য পাওয়া যেতে পরে।’
