রুপম আচার্য্য, মৌলভীবাজার: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা। ঢাকের কাঠি প্রায় পড়ে গেছে। মায়ের আগমন ঘটছে। শেষ মুহূর্তে চলছে দেবী সাজাতে শিল্পীদের রং-তুলির কারুকাজ।
এদিকে জেলা-উপজেলা ও শহর সেজে উঠছে উৎসবে রোশনাই হয়ে। মণ্ডপ তৈরির কাজেও এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এবছর মৌলভীবাজার জেলায় সার্বজনীন ও ব্যক্তিগত মিলিয়ে এক হাজার সাতটি মণ্ডপে শারদীয় দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া জেলার সবচেয়ে বড় পূজামণ্ডপগুলো হলোÑমৌলভীবাজার সদরের ত্রিনয়নী, মহেশ্বরী, আবাহনী, কুলাউড়ার কাদিপুর-শিববাড়ী মন্দির ও রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও দুর্গা মন্দির।
তবে এ বছর মৌলভীবাজার জেলায় এক হাজার সাতটি মণ্ডপে পূজার ব্যয় আনুমানিক প্রায় ২২ কোটি টাকা হবে বলে শেয়ার বিজকে জানান বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ মৌলভীবাজার জেলার সাধারণ সম্পাদক মহিম দে মধু।
তিনি বলেন, ‘আমরা পূজা উদ্যাপন পরিষদ থেকে জেলায় মিটিং ডেকে প্রত্যেক উপজেলার কমিটিকে বলেছি, প্রত্যেক মণ্ডপে তাদের পক্ষ থেকে দুজন করে স্বেচ্ছাসেবক সদস্য থাকবেন। এটা পূজামণ্ডপের জন্য নিজস্ব পাহারা থাকবে। গত বছরের কুমিল্লার ঘটনার পর, এবারের পূজায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খুবই তৎপর রয়েছে। বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজখবর রাখা হচ্ছে, কোনো সমস্যা আছে কি না।’ তাছাড়া বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ মৌলভীবাজার জেলার তথ্য অনুসারে এ বছর জেলার এক হাজার সাতটি পূজামণ্ডপে শুধু মূর্তি গড়া বাবদ ব্যয় হবে আনুমানিক প্রায় তিন কোটি ৫২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।
এদিকে দুর্গাপূজা উপলক্ষে সরকার থেকে প্রত্যেকটি পূজামণ্ডপে ৫০০ কেজি করে চাল দেয়া হবে, যা টাকার সমপরিমাণে আনুমানিক প্রায় ১৭ হাজার ৫০০ টাকা।’ এ বছর মৌলভীবাজার জেলায় মোট পূজা সার্বজনীন ৮৭১টি এবং ব্যক্তিগত ১৩৬টি অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে ৫ অক্টোবর মহাদশমীতে শেষ হবে শারদীয় দুর্গা উৎসব। এবছর দেবী দুর্গার গজে আগমন ও দেবীর নৌকায় গমন।
এদিকে কুলাউড়ার কাদিপুর শিববাড়ীতে এবারের দুর্গাপূজায় সিমেন্টের তৈরি এক হাজার হাতের দেবী দুর্গা স্থাপিত হয়ে পূজিত হবে। বিশালাকার এ মূর্তি এ বছর কাদিপুর শিববাড়ী মন্দিরের মূল আকর্ষণ। আগামী ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর আগেই আনুষঙ্গিক সব কাজ শেষ হবে। সিমেন্টের তৈরি এই দুর্গা প্রতিমা প্রায় ২৩ ফুট উঁচু।
মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া শেয়ার বিজকে বলেন, ‘আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আমাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যেকোনো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা পুলিশের যে সক্ষমতা আছে, সেটার সর্বোচ্চ ব্যবহার আমরা করব। জেলা ও উপজেলার পূজা কমিটির সঙ্গে আমরা মিটিং করেছি একাধিকবার। আমরা জেলার পূজাগুলোয় সিকিউরিটি সরঞ্জাম দিয়েছি, মণ্ডপে দুজন স্বেচ্ছাসেবকের জন্য দুটি হলুদ সিকিউরিটি জ্যাকেট দিয়েছি এবং একইসঙ্গে তাদের স্পেশাল প্লাস্টিকের লাঠি দিয়েছি। আমাদের পক্ষ থেকে জেলায় ৬৫০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। তাছাড়া প্রায় সাত হাজার আনসার ও মাঠে র্যাব থাকবে, প্রয়োজনে বিজিবি আসবে।’