Print Date & Time : 11 September 2025 Thursday 6:36 am

মৌসুমেও বাড়ছে সবজির দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক: কয়েক মাস ধরে বাজারে প্রতিটি সবজি বিক্রি হয়েছে চড়া দামে। নতুন সবজির বাজারে আসার পর দাম কমবে এমন আভাস দিয়েছিলেন বিক্রেতারা। কিন্তু খুব বেশি কমেনি সবজির দাম। শীত পড়তে শুরু করলেও এখনও বেশিরভাগ সবজির দাম আগের মতোই রয়ে গেছে। তবে কয়েক মাস ধরে যেমন চড়া দামে সবজি বিক্রি হয়েছে তার চেয়ে কিছুটা কমেছে সবজির দাম।

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখে গেছে, আগের চেয়ে সবজির দাম কিছুটা কমলেও এখনও চড়া সবজির বাজার।

বাজারে সিম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, কাঁচামরিচ ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে, গাঁজর ৮০, করলা ৬০, বাঁধা কপি ৪০ (প্রতি পিস মাঝারি), ফুলকপি ৫০ (প্রতি পিস মাঝারি), মুলা ৪০, নতুন আলু ৮০, ঢেঁড়স ৬০, শসা ৪০, পেঁপে ৩০, শালগম ৬০, পটোল ৬০, পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ এবং ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়। সাধারণ আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকায়, বরবটি ৬০, বেগুন ৫০, টমেটো ১৪০ টাকায়।

রাজধানীর রামপুরা বাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার করতে এসেছেন হাসান আহম্মেদ। তিনি বলেন, শীত প্রায় চলে এসেছে তবু বাজারে সবজির দাম কমেনি। দুই-একটা ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দাম এখনও ৫০ টাকার বেশি। অন্য বছরগুলোতে এ সময় সবজির দাম বলতে গেলে প্রায় অর্ধেক ছিল। গত পাঁচ/ছয় মাস ধরে অতিরিক্ত দামে সবজি কিনতে হচ্ছে আমাদের। সবাই বলেছিল শীত পড়তে শুরু করলে এবং নতুন সবজি উঠলেই দাম কমে যাবে। কিন্তু এখনও চড়া দামেই সবজি বিক্রি হচ্ছে। আগের চেয়ে কিছুটা দাম কমেছে এ কথা ঠিক, তবে তা খুব বেশি কমেনি। অন্য বছরের তুলনায় এখনও বেশি দামেই সবজি বিক্রি হচ্ছে বাজারে।

একই অভিযোগ করলেন মধ্যবাড্ডায় বাজার করতে আসা আরের  চাল ব্যবসায়ী সাইফ আলী বলেন, শীতের সবজি ফুলকপির পিস এখনও ৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। পটোল, বরবটি, ঢেঁড়স এখনও ৬০ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে। তাহলে সবজির দাম কমল কোথায়? শীতের সময় শুরু হয়ে গেছে। এ সময় সবজি অর্ধেক দামে বিক্রি হওয়ার কথা। তবুও দাম চড়া। অন্যবার এ সময় এসে ঠিকই কম দামে সবজি পাওয়া গেছে। এ বছর সেই তুলনায় সবজির দাম কমেনি। শুরুতে সিম বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা কেজিতে। সেই হিসাব করলে সিমের দাম এখন কমে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু শীতের এ সবজি এখন ৩০/৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলে স্বাভাবিক বা দাম কম আছে বলে মনে হতো। কিন্তু এটি আমাদের কিনতে হচ্ছে ৬০ টাকায়, যা আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য চড়া বলতে হবে।

গুলশান-সংলগ্ন একটি কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা এরশাদ আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাঁচ/ছয় মাস ধরে সবজির যে দাম গেছে সেই তুলনায় সব সবজির দামই কিছুটা কমেছে। তবে অন্য বছরে শীতের শুরুতে যেমন বাজার থাকে সেই তুলনায় এখনও সবজির দাম বেশি। পাইকারি বাজারে আমাদের বেশি দামে কেনা পড়ছে তাই খুচরা বাজারে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। নতুন সবজি উঠলে দাম আরও কমে যাবে।

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে অন্তত এক থেকে দুই টাকা বেড়েছে সবচেয়ে নিম্নমানের মোটা চালের দাম। রাজধানীর চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহে যে চাল ৪৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা গেছে, আজকে সেই চাল বিক্রি করতে হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা

কেজি দরে। ব্যবসায়ীরা মোটা চাল এখন ৪৮ টাকা থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। পাশাপাশি বেড়েছে মাঝারি চালের দামও। গত সপ্তাহে বিক্রি হওয়া ৫৬ টাকা কেজি মাঝারি চাল গতকাল শুক্রবার  বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা কেজি দরে।

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে সরু চালের দাম বেড়েছিল কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা।

মানিকনগর এলাকার চাল ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চিকন চালের দাম আগের মতোই আছে। তবে মোটা চাল ও মাঝারি মানের চালের দাম কেজিতে এক থেকে দুই টাকা বেড়েছে।’ তিনি বলছেন, গত সপ্তাহ থেকে যে চিকন চাল ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি, আগের সপ্তাহে সেই চাল ৬৮ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।

এদিকে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম বেড়েছে ১.০৯ শতাংশ এবং এই সপ্তাহে মাঝারি মানের চালের প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ১.৬১ শতাংশ।