প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় নানা আঙ্গিকে প্রকাশ্যেই চলছে তামাক জাতীয় পণ্যের প্রচারণা। সরকারি বিধিতে প্রকাশ্যে তামাক জাতীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রদর্শনে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছে না জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল (জেটিআই) এবং ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি)।
তামাক জাতীয় দ্রব্য গ্রহণে আকর্ষণ বাড়াতে রঙ-বেরঙের টি-শার্ট, ভ্যান ও নানা বিজ্ঞাপন সামগ্রী নিয়ে ময়মনসিংহ মহানগরীর পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা, উপজেলা শহরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা।
জানা গেছে, ধূমপান ও তামাকজাত পণ্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো তামাকজাত পণ্য বা তামাকের ব্যবহার প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে যে কোনো ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা নিষিদ্ধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। কোনো ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান আইনের এ বিধান লঙ্ঘন করলে অনূর্ধ্ব তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু বিদ্যমান আইনি বিধি-নিষেধ অমান্য করে ধূমপানে মানুষকে আগ্রহী করতে আগ্রাসী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে জেটিআই ও বিএটি।
জাপানি টোব্যাকো তাদের তামাকজাত পণ্য বহনকারী ভ্যানকে আকর্ষণীয়ভাবে সাজিয়ে অলিগলিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। নিয়োগকৃত লোকজন মানুষের কাছে গিয়ে তাদের সিগারেট পানে নানা অফার দিয়ে বেড়াচ্ছেন। ছোট ছোট দোকানগুলোয় গিয়েও তারা দোকানিদের তামাকজাত পণ্য বিক্রিতে নানাভাবে উৎসাহিত করছেন। জাপানি টোব্যাকো কোম্পানি চলতি বছরের শুরুর দিকে কোয়ালিটি শিরোনামে মিডিয়া ক্যাম্পেইনও চালিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন করে জেটিআই ও বিএটি’র আগ্রাসী প্রচারণা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন তামাকবিরোধী সংগঠনের নেতারা। তারা বলেছেন, সরকার যেখানে দেশের তরুণ সমাজকে মাদক এবং তামাক থেকে দূরে রাখতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে, সেখানে প্রকাশ্যে তামাকের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে বিদেশি কোম্পানিগুলো কিশোর, তরুণসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে তামাকের প্রতি আকৃষ্ট করছে। বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে গুরুত্বসহকারে দেখার জন্য দাবি জানিয়েছেন তামাক ও মাদকবিরোধী আন্দোলনের নেতারা।
জনস্বার্থ নিয়ে কাজ করা সংগঠন জনউদ্যোগের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম চুন্নু জানান, তামাক জাতীয় পণ্যের প্রকাশ্যে প্রচার-প্রারণা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাকের বিজ্ঞাপন বন্ধে সরকার ও নীতিনির্ধারকরা নিশ্চয়ই যথাযথ উদ্যোগ নেবেন।
জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান জানান, তামাক জাতীয় পণ্যের প্রচারণা চলছে কি না, সে বিষয়টি তার জানা নেই। যদি কোনো কোম্পানি তামাক জাতীয় পণ্যের প্রচারণা এবং তামাকজাত দ্রব্য সাধারণ মানুষকে গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
