মীর কামরুজ্জামান, যশোর: গতকাল সকালে যশোর থেকে খুলনা অভিমুখে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এদিন সকাল থেকে খুলনার উদ্দেশে কোনো ট্রেন যশোর থেকে ছেড়ে যায়নি। বিএনপি নেতারা বলছেন, সমাবেশ নস্যাৎ করার অপচেষ্টা হিসেবে বাস ও লঞ্চের মতো ট্রেনও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে বাসের পাশাপাশি শনিবার সকাল থেকে ট্রেন বন্ধ হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েন খুলনাগামী যাত্রীরা।
যশোর জংশন সূত্রে জানা গেছে, যশোর থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা ২০ মিনিটে বেনাপোল কমিউটার এবং ১১টায় সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস যশোর থেকে খুলনায় যায়। এর মধ্যে প্রতি সোমবার সাগরদাঁড়ি বন্ধ থাকে। তবে গতকাল সকাল থেকে দুপুর ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো ট্রেন খুলনার উদ্দেশ্যে যশোর ছেড়ে যায়নি।
বেলা ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে যশোর জংশনে কথা হয় খুলনার ট্রেনের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রী আব্দুর রাজ্জাক খানের (৭০) সঙ্গে। তার বাড়ি যশোরের রূপদিয়ায়। তিনি জানান, তিনি হার্টের রোগী। গতকালই তার খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসক দেখানোর কথা ছিল। বাস বন্ধ থাকায় তিনি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যশোর রেল জংশনে আসেন। কিন্তু কোনো ট্রেনের দেখা পাননি। তিনি বলেন, ‘অসুস্থ অবস্থায় এই কষ্ট কীভাবে সহ্য করা যায়। অন্যের দায় সাধারণ মানুষকে আর কতদিন বহন করতে হবে?’
এখানে কথা হয় খুলনার ট্রেনের জন্য অপেক্ষমাণ আরেক যাত্রী পারভীন বেগমের সঙ্গে। সঙ্গে তার দুই কন্যাসন্তান আর বড় একটি লাগেজ ছিল। তিনি জানান, খুলনার দৌলতপুরে তাদের বাড়ি। শুক্রবার তারে বোনের ছেলের বিয়ের জন্য কয়েকদিন আগে যশোর এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আজ (গতকাল) বাড়িতে জরুরি কাজ রয়েছে। এ কারণে বাড়ি না ফিরলেই নয়। ওদিকে বাস বন্ধ। তাই স্টেশনে সকাল থেকেই বসে রয়েছি। তবে ট্রেনের দেখা মিলছে না। টিকিট কাউন্টার থেকে বলছে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। এখন ছেলেমেয়েদের নিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্টেশনে বসে। দেখি কখন ট্রেন আসে।’
এ ব্যাপারে যশোর জেলা যুবদলের সহসভাপতি আমিনুর রহমান মধু বলেন, ‘খুলনায় বিএনপির মহাসমাবেশ নস্যাৎ করতে বাস ও লঞ্চের মতোই ট্রেনও বন্ধ করা হয়েছে। তবে তাতে তাদের উদ্দেশ্য পূরণ হবে না। সব বাধা উপেক্ষা করে ইতোমধ্যেই মহাসমাবেশে বিপুল জনসমাগম হয়েছে। আরও জনসমাগম হবে।’
এ ব্যাপারে যশোরের স্টেশন মাস্টার আয়নাল হাসান বলেন, ‘বেনাপোল কমিউটার ক্যানসেল হয়েছে। আর ঈশ্বরদী স্টেশনে সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন ফেল করেছে।’