প্রতিনিধি, মাগুরা: জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) জন্য নতুন গাড়ি কেনার বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, যাদের জন্য নতুন গাড়ি কেনা হচ্ছে, তারা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য। গতকাল বৃহস্পতিবার মাগুরায় নতুন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন উদ্বোধন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত বুধবার অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ডিসি ও ইউএনওদের জন্য ২৬১টি নতুন গাড়ি কেনার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৮০ কোটি টাকা। জাতীয় নির্বাচনের সময় সাধারণত ডিসিরা রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ইউএনওরা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, সরকার একটা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল গাড়ি কেনা বন্ধ রাখার জন্য। সেই নিষেধাজ্ঞা এই নির্বাচনের প্রয়োজনে শিথিল করা হয়েছে বলেই গতকাল ২৬১টি গাড়ি কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটা অত্যন্ত প্রয়োজন। কারণ, যাদের (ডিসি ও ইউএনও) এসব গাড়ি দেয়া হচ্ছে, তারা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য।
আরেক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে এই সরকারের অধীনই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সরকার চায় সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। তবে কোনো দল নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, এটা তাদের ব্যাপার। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলো কি না, এটা জনগণ নির্ধারণ করবে। জনগণ অংশ নিলেই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে।’
সকালে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন উদ্বোধন করতে মাগুরায় যান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। দুপুর ১২টার দিকে আটতলা ভবনটি উদ্বোধন করেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পর নতুন ভবনের সামনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য বীরেন শিকদার, ৬৪ জেলা সদরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়ক (যুগ্ম সচিব) বিকাশ কুমার সাহা, মাগুরার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ অমিত কুমার দে, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশ সুপার মশিউদ্দৌলা রেজা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু, খুলনা গণপূর্ত বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুল কাশেম মো. শাহজালাল মজুমদার ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পুরোনো ভবনে বিচারকাজ চলছিল। কক্ষসংকটে বিচারক ও বিচারপ্রার্থীরা নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। নতুন এই ভবন চালু হওয়ার ফলে আদালতের মামলাজট কমবে। বিচারপ্রার্থীরা উপকৃত হবেন। মাগুরা গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ১২ তলা ফাউন্ডেশনের এই ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৪৩ কোটি ৯৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যয়ে এই ভবনের ৮ তলা পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে। ১ লাখ ১১ হাজার ১৩৬ বর্গফুট আয়তনের এই ভবনে ৮টি এজলাস, ক্যাফেটেরিয়া, পুরুষ ও নারীদের জন্য আলাদা হাজতখানা, গ্রন্থাগার, ব্রেস্ট ফিডিং কক্ষসহ নানা কক্ষ আছে।