Print Date & Time : 21 July 2025 Monday 5:13 am

যুক্তরাজ্যে গাড়ি সরবরাহে বিলম্ব চীন-জাপানের কারখানায় ধস

শেয়ার বিজ ডেস্ক: বিশ্বব্যাপী কভিড মহামারির কারণে এক বছরের বেশি সময় বৈশ্বিক চিপ (সেমিকন্ডাক্টর) সংকট ছিল। ফলে এশিয়া ও ইউরোপের অনেক গাড়িনির্মাতা কোম্পানি বিভিন্ন সময় উৎপাদন সাময়িক বন্ধ রেখেছিল। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের শুরুতে আবার উৎপাদনে আসছিল তারা। তবে বিদায়ী জুন মাসে ফের বৈশ্বিক চিপ সংকট দেখা দেয়। এতে এশিয়ার অন্যতম উৎপাদন বাজার চীন ও জাপানের গাড়িশিল্পের উৎপাদনে ভাটা পড়ে। অন্যদিকে যুক্তরাজ্যে গাড়ির ক্রয়াদেশ বিলম্বিত হয়। খবর: গার্ডিয়ান, ব্লুমবার্গ। 

জাপানে পাঁচ দশমিক ৯ শতাংশ শিল্পোৎপাদন হ্রাস: গতকাল ব্লুমবার্গ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত মাসে জাপানের শিল্পোৎপাদন সবচেয়ে খারাপ ছিল, যদিও চিপ সংকটের মধ্যে আগের মাসে (মে) দেশটির শিল্পোৎপাদন বেশ শক্ত অবস্থানে ছিল। কিন্তু জুনে দেশটির শিল্পোৎপাদন পাঁচ দশমিক ৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা ধারণার চেয়েও অনেক বেশি। ব্লুমবার্গে বিশ্লেষণ ছিল জুন মাসে দুই দশমিক এক শতাংশ শিল্পোৎপাদন হ্রাস পাবে।

সেমিকন্ডাক্টর স্বল্পতার কারেণে জাপানে কার উৎপানসহ প্রায় সব ধরনের শিল্পোৎপাদন জুন মাসে হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া করোনা প্রাদুর্ভাবেও দেশটির শিল্প খাতে ক্ষতি হয়েছে।

ব্লুমবার্গের অর্থনীতিবিদ ই্য়াকি মাসুজিমার মতে, জাপানে মে মাসের চেয়ে জুনে উৎপাদন বেশ কম হয়েছে। এছাড়া কভিডের কারণে চাহিদাও অনেকটা দুর্বল ছিল। তিনি বলেন, জাপানের ১৫টি শিল্প ক্যাটেগরির মধ্যে জুনে ১৩টি ক্যাটেগরিতে উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। যেখানে যানবাহন উৎপাদন সবচেয়ে বেশি কমেছে।

দ্রুত গাড়ি উৎপাদন হ্রাসের পেছনে চিপ সংকটকে দায়ী করেন তিনি। তার মতে, সুজুকি ও টয়োটায় উৎপাদন বিপর্যয় হয়েছে। দুই বছর আগে মে মাসে করোনার প্রাদুর্ভাব যখন শুরু হয়নি তখন টয়োটার মোট দেশজ উৎপাদন ছিল দ্ইু লাখ ৭৪ হাজার ইউনিট। সেখানে জুনে প্রায় এক লাখ ইউনিট কম উৎপাদন হয়েছে।

জাপানের অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের (এমইটিআই) তথ্যমতে, চিপ সংকটের কারণে চলতি শরৎকালীন ঋতুতে জাপানের গাড়ি উৎপাদন ১৯ দশমিক চার শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

এদিকে রয়টার্সের জরিপে বলছে, জাপানের শিল্পোৎপাদনের ধীরগতি দেশটির অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।

চীনের পিএমআই সূচক কমেছে: অন্যদিকে জুনে চীনের দাপ্তরিক ম্যানুফ্যাকচারিং পার্চেজিং ম্যানেজার’স ইন্ডেক্স (পিএমআই) সূচকে দেখা যায়, শিল্পোৎপাদন মে মাসের ৫০ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে কমে ৫০ দশমিক এক শতাংশে নেমে এসেছে।

অন্যদিকে এনবিএসের তথ্যমতে, চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ধীরগতি ছিল জুনে, যেখানে পিএমআই সূচক মে মাসের ৫৫ দশমিক দুই শতাংশ থেকে কমে ৫৩ দশমিক পাঁচ শতাংশে নেমেছে।

যুক্তরাজ্যে গাড়ির ক্রয়াদেশ বিলম্ব: এদিকে যুক্তরাজ্যেও গাড়ির ডিলারশিপ গ্রুপ পেন্ড্রাগন জানিয়েছে, বৈশ্বিক চিপ সংকটের কারণে জুন মাসে তাদের গাড়ি সরবরাহ অর্ধেকে নেমেছে, যেখানে অনেক ক্রয়াদেশে এরই মধ্যে দেরি হয়ে গেছে।

গতকাল এক বিবৃতিতে পেন্ড্রাগন জানিয়েছে, কভিডের প্রভাবের কারণে চালিত অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধেও গাড়ি সরবরাহে অনিশ্চয়তা থাকছে। এছাড়া চিপস্বল্পতায় নতুন গাড়ি সরবরাহও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

এদিকে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার চেয়ে সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যদিও দেশটির হাউস রেট রেকর্ড সর্বোচ্চ উঠেছে। ক্যাপিটাল ইকোনমিসের পাল ডালসে বলেন, বাড়িভাড়া বৃদ্ধি পেলেও যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে তা ভূমিকা রেখেছে।