শেয়ার বিজ ডেস্ক: বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে গত সোমবার (চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন) উত্থানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ বা ফেডের আসন্ন গ্রীষ্মকালীন সম্মেলন ঘিরে বিশ্ব পুঁজিবাজারে এ উত্থান হয়েছে। ফেড মনে করছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে অথবা মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য নীতি সুদহার বাড়ানো হবে। খবর: এপি।
লন্ডন, টোকিও, প্যারিস ও ওয়াল স্ট্রিটে এদিন উত্থান দেখা গেছে। তবে সাংহাইয়ে পতন হয়েছে। এদিন তেলের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবারে ওয়াল স্ট্রিটের বেঞ্চমার্ক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকের পতন হয়েছে। অথচ কয়েকদিন পরেই উয়োমিং অঙ্গরাজ্যের জ্যাকসন হোলে ফেডের সম্মেলন হবে। ফেড কর্মকর্তারা জানান, গত বছরের মতো এবারের সম্মেলনেও নীতিগত পরিবর্তন আনা হবে।
এ সম্মেলনে বিনিয়োগকারীদের জন্য চমক থাকছে বলে মনে করেন মিজুহো ব্যাংকের তান বুন। এক প্রতিবেদনে তিনি বলেন, ফেড প্রধান জেরোম পাওয়েল নতুন নীতি আরোপ করবেন, যার মাধ্যমে মূল্যস্ফীতির হার কমে আসবে।
লন্ডনের এফটিএসই ১০০ সূচক সোমবার সকালে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৭ হাজার ২৮১ পয়েন্ট হয়। এদিন প্যারিসের সিএসি ৪০ ১ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, তাদের পয়েন্ট বেড়ে ৭ হাজার ২৩৭ দশমিক ৩২ পয়েন্ট হয়েছে। ফ্রাঙ্কফুর্টের ডিএএক্স সূচকও বৃদ্ধি পায়, শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৬৭২ পয়েন্টে।
ওয়াল স্ট্রিটের এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ফিউচার এদিন শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায় এবং ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ বৃদ্ধি পায় শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। এর আগে শুক্রবার এ সূচকের শূন্য দশমিক ১ শতাংশ পতন হয়। এদিন ডাও শূন্য দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও নাসডাক কম্পোজিট সূচকের শূন্য দশমিক ২ শতাংশ পতন হয়।
এশিয়ার পুঁজিবাজারে সোমবার মিশ্রভাব দেখা যায়। এদিন সাংহাই কম্পোজিট ইনডেক্স ১ দশমিক ২ শতাংশ পতন হয়ে ৩ হাজার ৯২ দশমিক ৯৭ পয়েন্টে শেষ হয়। হংকংয়ের হ্যাং সেং ১ দশমিক ৮ শতাংশ দর হারায়। এতে তাদের পয়েন্ট পৌঁছায় ১৭ হাজার ৬২৩ দশমিক ২৯ পয়েন্টে। সিডনির এসঅ্যান্ডপি-এএসএক্স ২০০ শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ হারিয়ে ৭ হাজার ১১৫ দশমিক ৫০ পয়েন্টে শেষ হয়। অন্যদিকে টোকিওর নিক্কেই ২২৫ শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ৩১ হাজার ৫৬৫ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট হয়। সিউলের দ্য কোসপির সূচক বৃদ্ধি পায় শূন্য দশমিক ২ শতাংশ, পয়েন্ট হয় ২ হাজার ৫০৮ দশমিক ৮০। মুম্বাইয়ের সেনসেক্সের শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। এতে তাদের পয়েন্ট বেড়ে হয় ৬৫ হাজার ৩০০ দশমিক ৩০। এশিয়ার দুই পুঁজিবাজার নিউজিল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরের সূচকেও পতন হয়েছে, তবে ব্যাংকক ও জাকার্তার সূচক বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২৩ সালের প্রথম সাত মাসে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু বিনিয়োগকারীদের সেই লাভের এক-চতুর্থাংশ দিয়েছে তারা। অনেক বিনিয়োগকারী তাদের অর্থ সরিয়ে বন্ডে বিনিয়োগ করেন। কেননা বন্ডে বিনিয়োগ তুলনামূলক কম ঝুঁকির বলে মনে করেন তারা।
মাইক্রোসফট, অ্যালফাবেট ও টেসলা শুক্রবার যথাক্রমে শূন্য দশমিক ১, ১ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ১ দশমিক ৭ শতাংশ দর হারায়। উচ্চ সুদহারের কারণে বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর দরপতন হয়েছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ১০ শতাংশ পর্যন্ত দর হারায়, যা দরপতনের দিক দিয়ে চলতি বছরে সর্বোচ্চ।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি তথ্যে দেখা গেছে, ভোক্তাব্যয় এবং নিয়োগ দেয়ার হার অপ্রত্যাশিতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে, ফেড দীর্ঘমেয়াদে ঋণের হার বাড়াবে। যুক্তরাষ্ট্রে গত বছরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ শতাংশ, চলতি বছরে এ হার কমে আসলেও ফেডের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় তা এখনও ২ শতাংশ বেশি। গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে ভোক্তামূল্য বেড়েছে ৩ দশমিক ২ শতাংশ, জুনে যা ছিল ৩ শতাংশ।