Print Date & Time : 2 September 2025 Tuesday 7:08 pm

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে ১০০ পণ্যে শুল্ক কমাতে পারে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে প্রায় ১০০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক তুলে নেয়ার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। এই উদ্যোগের লক্ষ্য আমদানি সহজ করা, ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো।
সরকার ইতোমধ্যে ১৬১টি পণ্যের একটি তালিকা করেছে, যেগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হতে পারে।

এর মধ্যে ১০০টি পণ্যের ওপর শুল্ক পুরোপুরি তুলে নেয়ার চিন্তা চলছে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে-বিভিন্ন যন্ত্রপাতি এবং যন্ত্রাংশ, তৈরি পোশাকশিল্পের কাঁচামাল, ম্যান মেড ফাইবার, উল, বর্জ্য পানি পরিশোধনের যন্ত্র (ইনফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট), ডায়ালাইসিস ফিল্টার, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ও কিছু অস্ত্র। এসব পণ্যে বর্তমানে সর্বোচ্চ ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপিত আছে। তবে নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী এই শুল্ক বাতিল হলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানিয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার আগে এরই মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এনবিআরের একটি সূত্র জানিয়েছে, শুল্ক তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রযোজ্য হবে না। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, তা সব দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই ১৬১টি পণ্যের আমদানি মূল্য ছিল প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা। এতে সরকার রাজস্ব পেয়েছে প্রায় ৬১০ কোটি টাকা। এনবিআরের কর্মকর্তারা মনে করছেন, শুল্ক প্রত্যাহারে বড় ধরনের রাজস্ব ঘাটতি হবে না। বরং বাণিজ্যিকভাবে তা লাভজনক হবে।

উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ট্রাম্প প্রশাসনের এক আদেশে বিভিন্ন দেশের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করে। এর আওতায় বাংলাদেশের কিছু পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৩৭ শতাংশ শুল্ক নির্ধারিত হয়। যদিও আগে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত এ নিয়ে সরকারি পর্যায়ে পর্যালোচনা করার সময় পাচ্ছে।

বর্তমানে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে বছরে প্রায় ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে, আর রপ্তানি করে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। ফলে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজারে পরিণত হয়েছে। শুল্ক হ্রাসের এই প্রস্তাব দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করবে এবং ভবিষ্যতের বাণিজ্য সম্প্রসারণে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে সরকার।