যুগপৎ আন্দোলনে মানুষের ‘আস্থা বেড়েছে’: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকার হটানোর যুগপৎ আন্দোলনে জনগণের ‘আস্থা বেড়েছে’ বলে মনে করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রোববার ঢাকার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোট ও বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকের পর সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যুগপৎ আন্দোলনে অবশ্যই মানুষের মধ্যে একটা আস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো এই দাবির (১০ দফা দাবি) সঙ্গে একমত হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করছে, সংগ্রাম করছে।

‘এটা (যুগপৎ আন্দোলন) নিঃসন্দেহে অনেক বড় মাত্রা যুক্ত করেছে এবং জনগণকে আশ্বস্ত করেছে।’

বিএনপির পদযাত্রা নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “তিনি (ওবায়দুল কাদের) বোঝা যায় কিশোর কুমারের একটা গান আছে না, ওখানে কিন্তু এটা এসেছেÑ‘মরণযাত্রা যেদিন যাবে।’ ওইটা তার মনে পড়ছে আরকি! তিনি নিজের চিন্তা করছেন কি না, আমি জানি না।

“আমরা পদযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে এটুকু বলতে পারি, আমাদের পদযাত্রার মধ্য দিয়ে একটা নতুন মাত্রা সৃষ্টি হলো এবং জনগণের মধ্যে একটা আকাক্সক্ষাÑগণতন্ত্রকে ফিরে পাওয়ার জন্য রাজপথে নেমে আসার একটা নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে।”

ব্রিফিংয়ে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, আগামী দিনের আন্দোলন আরও গতিশীল করতে বিএনপির সঙ্গে আলাপ হয়েছে। এটি একটি স্থির সিদ্ধান্তের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

“সেই সিদ্ধান্তের কথা আমি বলতে চাই না। শুধু এটুকু বলতে চাই, সারাদেশে এই ফ্যাসিস্ট সরকারবিরোধী, এই অগণতান্ত্রিক সরকারবিরোধী সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করাই আজকে আমাদের মূল লক্ষ্য। এ-টু-জেড সব সরকারবিরোধী শক্তি আজ মনে মনে, অন্তরে অন্তরে সংকল্পবদ্ধ, ঐক্যবদ্ধ।”

আগামী ৪ জানুয়ারির যুগপৎ আন্দোলন থেকে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানান জামাল হায়দার।

গত শুক্রবার ‘সরকার হটানোর’ যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত থাকা গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক হয়। রোববার ১২ দলীয় জোটের লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করল দলটি।

বৈঠকে ১২ দলের শরিক কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, এলডিপির আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপার রাশেদ প্রধান, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল করিম, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম, মুসলিম লীগের তফাজ্জল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ও আবদুল আউয়াল মিন্টু।

রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ‘রাষ্ট্রীয় সুবিধা’ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনি দেখবেন, সরকার আমাদের প্রোগ্রামের সময় তিন দিন আগে থেকে পরিবহন ধর্মঘট করিয়ে দেয়, তারা তিন দিন আগে থেকে পুলিশকে নামিয়ে দিয়ে রাস্তার মধ্যে বসিয়ে মোবাইল টেলিফোন পর্যন্ত চেক করতে থাকে।

“এটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের কৌশল যে, তারা বিরোধী দলকে যেকোনো মূল্যে হোক বাধা প্রদান করবে, তাদের তারা কোনোভাবে কর্মসূচি করতে দেবে না। অন্যদিকে ভিন্নমত সহ্য করবে না। আর তারা (সরকারি দল) তাদেরটাকে বলতেই থাকবে, করতেই থাকবে এবং সেক্ষেত্রে তারা রাষ্ট্রের সব যন্ত্রকে ব্যবহার করবে।”