প্রতিনিধি, বান্দরবান : বান্দরবানে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি করে যুবলীগ নেতা মংসিং উ মারমাকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করেছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। গতকাল বুধবার সকালে জেলা যুবলীগের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মংসিং উ মারমাকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়।
পরে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুর রহিম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র মো. ইসলাম বেবী, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষ্মী পদ দাশ, পৌর শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামশুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাদেক হোসেন চৌধুরী, যুবলীগের আহ্বায়ক কেলুমং মারমা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পাইহ্লা অং মারমা, যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর ফারুক প্রমুখ।
সমাবেশে মো. ইসলাম বেবী বলেন, পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে অস্ত্রধারীরা পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করছে। পাহাড়ে তণমূলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভিত্তি দুর্বল করতে জেএসএস সন্ত্রাসীরা অপচেষ্টা চালাচ্ছে। গত দু’বছরে আওয়ামী লীগের ১০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। হত্যাকারী এবং খুনের নেপথ্যের নায়কদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুশিয়ারি দেন তিনি।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রাজবিলা ইউনিয়নের বাঘমারাসহ আশেপাশের এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে সেনাবাহিনীর টহল বাড়ানো হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানার ওসি শহীদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, লাশ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কারা জড়িত বিষয়টিও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বান্দরবান সদর উপজেলার রাজবিলা ইউনিয়নের চিংক্যউ পাড়ায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা বাড়ির পার্শ^বর্তী এলাকায় গুলি করে জামছড়ি যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মংসিং উ মারমা (৩৮) হত্যা করে। এর আগে জুলাইয়ে বাঘমারা বাজার পাড়া এলাকায় জনসংহতি সমিতি এমএন লারমা (সংস্কার) গ্রুপের কেন্দ্রীয় নেতাসহ ছয়জনকে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করা হয়। সিক্স মার্ডার এবং যুবলীগ নেতাকে হত্যা একসূত্রে গাঁথা বলে দাবি আওয়ামী লীগ নেতাদের।