Print Date & Time : 17 August 2025 Sunday 9:48 am

রাজধানীতে মদপানে মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন, গ্রেপ্তার ছয়

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ভেজাল মদপানে মৃত্যুর ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় ভেজাল মদ তৈরির কারখানার সন্ধানসহ বিপুল পরিমাণ মদ ও মদ তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হচ্ছেনÑমনতোষ চন্দ্র অধিকারী ওরফে আকাশ, রেদুয়ান উল্লাহ, সাগর বেপারী, নাসির আহমেদ ওরফে রুহুল, জাহাঙ্গীর আলম ও সৈয়দ আল আমিন। গত সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানীর তেজগাঁও ও ভাটারা থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি গুলশান জোনাল টিম।

ঘটনা তদন্তে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পায়, দুজন ব্যক্তি মোটরসাইকেল করে এসে এক বোতল মদ ভিকটিমকে দিয়ে চলে যায়। ওই মদ সেবনে ভিকটিমের মৃত্যু হয়। পরবর্তী সময়ে ওই দুই ব্যক্তিকে শনাক্ত করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর সোমবার রাত পৌনে ৯টার দিকে তেজগাঁওয়ের ইয়ানতুন চাইনিজ রেস্টুরেন্টের সামনে হতে মনতোষ, রেদুয়ান ও সাগরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভাটারা থানার খিলবাড়ীরটেক এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ভেজাল মদ তৈরির কারখানার সন্ধানসহ কারখানার মালিক নাসির, ম্যানেজার আল আমিন ও কারিগর জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ভেজাল মদের কারখানা থেকে নকল বিদেশি মদ, মদের খালি বোতল, মদের বোতলের মুখ আটকানো কর্ক, স্টিকার, স্পিরিট, কৃত্রিম রংসহ বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এ চক্রের মূলহোতা নাসির ভেজাল মদ তৈরি করে বিক্রি করত। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়্যারহাউজগুলো থেকে মদ ক্রয় বিক্রয়ে কড়াকড়ি থাকায় বাজারে মদের সংকট তৈরি হয়। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা ভেজাল মদ তৈরির কারখানা গড়ে তুলে। তারা ভেজাল মদ তৈরির উপকরণ স্পিরিট, স্টিকার ও  রং মিটফোর্ট হাসপাতালের আশেপাশে এলাকা থেকে সংগ্রহ করত। এরপর সেগুলো দিয়ে  চিনি পোড়ানো কালার ব্যবহার করে ভেজাল মদ তৈরি করত। তৈরিকৃত ভেজাল মদ চক্রের অন্য সদস্যদের দিয়ে বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করত। তাদের মাধ্যমে ভেজাল মদ চলে যেত সেবনকারীদের কাছে।

মোহাম্মদপুর ও ভাটারা থানা এলাকায় মদপানে যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে সেগুলোও গ্রেপ্তারদের কারখানাতেই তৈরিকৃত ভেজাল মদ বলে গোয়েন্দা তদন্তে বেরিয়ে আসে।

প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন মদপান করার পর অসুস্থ হয়ে ভাটারা থানা এলাকায় তিনজন, ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকায় একজন ও মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় দুজনসহ মোট ছয়জনের মৃত্যু হয়, যা রাজধানীসহ দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এ সব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করা হয়। উক্ত মামলাগুলো থানা পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় মামলা করা হয়েছে।