রাজশাহীতে বেড়েছে শুকনো মরিচের দাম

প্রতিনিধি, রাজশাহী: ডলারের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি ভারতে বেড়েছে শুকনো মরিচের দাম। তবে দেশটিতে যে পরিমাণ দাম বেড়েছে তার ৩ গুণ দাম বেড়েছে বাংলাদেশের বাজারে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশে। এ কারণেই দেশীয় বাজারে আমদানিকৃত শুকনো মরিচের দাম বেড়েছে। ভারতে কেজিতে ৫০ টাকা বাড়লেও দেশে শুকনো মরিচের কেজিতে এক লাফে বাড়ল ২০০ টাকা।

ভোমরা স্থলবন্দরের মসলা পণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাফসান এন্টারপ্রাইজ মরিচের দাম বিষয়ে জানান, প্রায় ১৫ দিন আগে মাত্র ৩০০ টাকা কেজি দরে শুকনো মরিচ বিক্রি হলেও তা এখন ৭০ থেকে ৯০ টাকা বেড়েছে। পাইকারিতে যে দামে বিক্রি হয় তার ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয় খুচরায়। শুকনো মরিচ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৭৫-৩৮০ টাকা। কোথাও ৪০০ টাকা হিসেবে। দুই সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ৩০০-৩১০ টাকায়।

সারাদেশের ন্যায় রাজশাহীর বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারি ও খুচরা বাজারে বেড়েছে মরিচের দাম। এর প্রভাব পড়েছে গুঁড়া মরিচের ওপর। কেজিতে বেড়েছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।

রাজশাহী সাহেববাজার মাস্টার পাড়ার মসলা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান সুশীল স্টোর জানান, মরিচের কেজিতে এক লাফে ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা বেড়েছে। আগে ৩০০ টাকা কেজি ছিল শুকনো মরিচ, এখন ৪৮০ টাকা কেজি। ৫০ টাকা শ হিসেবে গুঁড়া মরিচ বিক্রি করছেন তারা।

বাবুল স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. হাসিব উদ্দিন বলেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি ভারতে শুকনো মরিচের দামও বেড়েছে, যা প্রভাব পড়েছে দেশীয় বাজারে। সম্প্রতি শুকনো মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ায় পণ্যটির আমদানিও কমে গিয়েছে। আর আমাদের কাছে যা আছে তা বিক্রি করছি। তবে ডলারের দাম কমলে তার কিছুদিন পর দাম কমতে পারে। বাংলাদেশে কোনো জিনিসের দাম একবার বাড়লে তা জলদি কমে না।

গতকাল সোমবার রাজশাহীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারিতে দাম বাড়ায় প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। শুকনো মরিচ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৪৮০-৫০০ টাকা কেজি দরে। দুই সপ্তাহ আগেও পণ্যটি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৩৫০-৩৭০ টাকা দরে। ১৫ দিনের ব্যবধানে কেজিতে ১৫০-১৬০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। অল্প ১০০ গ্রাম কিংবা আধা কেজির দাম হিসেবে ৫০০ টাকা কেজি ধরেই বিক্রি করা হচ্ছে।

অন্যদিকে ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাসে এ বন্দর দিয়ে শুকনো মরিচ আমদানি হয়েছে ১ হাজার ৯৭৯ টন, যার মূল্য ৪২ কোটি ৪ লাখ টাকা। আমদানি থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময় শুকনো মরিচ আমদানি হয় ২ হাজার ৭৫ টন, যার মূল্য ২৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা। যেখান থেকে সরকারের রাজস্ব হয় ২ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের বিভাগীয় সহকারী কমিশনার আমীর মামুন জানান, শুকনো মরিচ আমদানিতে সরকারের বছরে উল্লেখযোগ্য হারে রাজস্ব আয় হয়। তবে গত অর্থবছরের প্রথম মাসের তুলনায় শুকনো মরিচ আমদানি কিছুটা কমেছে। তাই দাম বেড়েছে।