Print Date & Time : 6 July 2025 Sunday 4:01 am

রামেক হাসপাতালে ‘দুর্নীতি’ বন্ধ করে সুচিকিৎসা নিশ্চিতের দাবি

প্রতিনিধি, রাজশাহী:‘রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চলছে নানারকম অনিয়ম আর দুর্নীতি। অব্যবস্থাপনায় ভেঙে পড়েছে চিকিৎসাসেবা। বেশিরভাগ চিকিৎসকই এখানে ঠিকমতো রোগীদের সেবা দেন না। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর দায়িত্ব দিয়ে তারা ব্যস্ত থাকেন প্রাইভেট প্র্যাকটিসে।’ সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের এক স্মারকলিপিতে এ অভিযোগ তোলা হয়েছে। গতকাল সোমবার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে এ স্মারকলিপি দেয়া হয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. কামরুজ্জামান স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। এ সময় রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মো. লিয়াকত আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. জামাত খান, সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশিষ প্রামাণিক দেবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা মিনহাজ উদ্দিন মিন্ট প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

স্মারকলিপিতে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসকদের দায়িত্ব পালনে ফাঁকি এবং অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে। এতে অনতিবিলম্বে এসবের সমাধান চাওয়া হয়েছে। দাবি মেনে সমাধান না হলে রাজশাহীর মানুষকে নিয়ে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছে পরিষদ।

এতে বলা হয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত অনেক চিকিৎসক রোগী দেখতে ওয়ার্ডে যান না। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দিয়েই রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হয়। এতে রোগীদের মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হয়। অনেক সময় বিনা চিকিৎসায় তাদের প্রাণ হারাতে হয়। অধিকাংশ চিকিৎসক সরকারি নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যত্রতত্র প্রাইভেট প্রাকটিসে ব্যস্ত রয়েছেন। তারা হাসপাতালে যান শুধু হাজিরা খাতায় সই করতে। তাদের কারণে নগরীতে ব্যাঙের ছাতার মতো ক্লিনিক আর ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে। এছাড়া কমিশনের বিনিময়ে হাসপাতালের কিছু ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা এ সময় ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করে মোটা অঙ্কের টাকা পাচ্ছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

স্মারকলিপিতে আরও বলেছে, রামেক হাসপাতালে মুমূর্ষু রোগীদের জন্য নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) শয্যা আছে। তবে জটিল রোগীদের বিবেচনায় তা সংখ্যায় খুবই নগণ্য। এ শয্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বার্ন ইউনিটেও আইসিইউ শয্যা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে পরিষদ। এছাড়া হাসপাতাল ঘিরে দালালচক্র ও অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের কথাও স্মারকলিপিতে তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, এতে রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। রোগী মারা গেলে তার মরদেহ হাসপাতাল থেকে বের করতে দালাল চক্রের হাতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অ্যাম্বুলেন্সগুলো মরদেহসহ তাদের স্বজনদের জিম্মি করে।

তারা বলেন, স্বজনহারা ব্যক্তিদের দুর্বলতার সুযোগে চক্রটি হাসপাতালে অমানবিক আচরণ করে আসছে। এদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের দাবি জানানো হয় স্মারকলিপিতে। এছাড়া নগরীর পাড়া-মহল্লায় অবৈধভাবে গজিয়ে ওঠা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকগুলোর প্রতারণার ব্যাপারেও কঠোর নজরদারির দাবি জানানো হয়। এ ব্যাপারে দ্রæত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানানো হয়েছে।